সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র ২০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি
যুক্তরাষ্ট্র সফররত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকে সামরিক চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। গত মঙ্গলবারের এ সাাতে সৌদি যুবরাজকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো বেশি করে অস্ত্র কেনা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের আহ্বান জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, এতে করে মার্কিন জনগণের কর্মসংস্থান হবে। ট্রাম্প আশা প্রকাশ করে বলেন, চমৎকার সামরিক সরঞ্জাম কেনার মাধ্যমে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার সম্পদ ভাগাভাগি করে নেবে।
সাাৎকালে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের অস্ত্র কেনায় সৌদি আরবের প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, সৌদি অস্ত্র ক্রয়ের কারণে শত শত কোটি ডলার ঘরে ফেরাতে সমর্থ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অস্ত্র ব্যবসায় ৪০ হাজার মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বৈঠকে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার বিষয়টিও উঠে আসে।
সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে আইএসের শক্তিয়ের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা আইএস দখলকৃত এলাকার প্রায় শতভাগ পুনর্দখল করে ফেলেছি। আমরা খুব দ্রুততার সাথে অগ্রসর হয়েছি, আর তা সত্যি শেষ হতে চলেছে। আমরা এখন কিছু বিশেষ এলাকা থেকে চলে আসতে পারব। অনেক দিন ধরেই আমরা সেখান থেকে চলে আসতে চাচ্ছি।’
সৌদি যুবরাজ বলেন, ‘এ কারণেই আমরা এখানে বসেছি। আমরা সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে এটা করার পাশাপাশি আমাদের উভয় দেশের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক হুমকি থেকে মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হতেই এখানে কথা বলছি।’
ট্রাম্প ও যুবরাজের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ ও এর অর্থায়ন বিষয়ে কথা হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদকে কোনোভাবেই অনুমোদন করা হবে না। সন্ত্রাসবাদের কারণে যেকোনো দেশের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’ ট্রাম্প সন্ত্রাসীদের অর্থ জোগান বন্ধে সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশের প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ট্রাম্পের চেয়ে ৩৯ বছরের ছোট মোহাম্মদ বিন সালমান প্রেস ব্রিফিংয়ে দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরনো বন্ধু। ৮০ বছর ধরে রাজনীতি, অর্থনীতি ও নিরাপত্তায় তাদের সাথে আমাদের মিত্রতা ও পারস্পরিক স্বার্থ আছে। এই সম্পর্কের ভিত্তি আসলেই বিশাল ও গভীর।’
গত বছর দুই নেতা মিলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি আরবের ২০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ব্যাপারে রাজি হন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ও অন্তর্ভুক্ত। তবে মঙ্গলবার সেই প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। আগের চেয়ে দ্বিগুণ বিনিয়োগের কথা জানান তিনি।
উল্লেখ্য, যুবরাজ হিসেবে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিজের দুই সপ্তাহব্যাপী সফর শুরু করেছেন তিনি।
মার্কিন প্রতিরামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের সাথে রাতের খাবারে অংশ নেয়া ছাড়াও সৌদি যুবরাজ নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, অর্থমন্ত্রী স্টেভেন নুশিন ও বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রোজের সাথে বৈঠক করবেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনারের সাথেও বৈঠক করবেন সৌদি যুবরাজ। দুই সপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্র সফরে মোহাম্মাদ বিন সালমানের নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, সিলিকন ভ্যালি, লস এঞ্জেলেস ও হাউসটন পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে।