ভূমি দিবসের বিক্ষোভে উত্তাল গাজা
ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত
হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজা থেকে ইসরাইলের সীমান্তের দিকে মিছিল করে যাওয়ার পর তাদের ওপর ইসরাইলি সৈন্যরা গুলি চালিয়েছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে ছয় সপ্তাহব্যাপী এক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিরা এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি গুলিতে নিহত হয়েছেন। আরো প্রায় ১৫ শতাধিক মানুষ ইসরাইলি সৈন্যদের চালানো গুলিতে আহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলছে, অন্তত ছ’টি জায়গায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে এবং তারা দাঙ্গায় ‘উস্কানিদাতাদের’ দিকে গুলি করছে।
ফিলিস্তিনিরা তাদের এই মিছিলের নাম দিয়েছে ‘গ্রেট মার্চ টু রিটার্ন’ বা নিজের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার মিছিল। সীমান্তের কাছে তারা পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করে সেখানে অবস্থান নিয়েছে।
ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের ভেতরে তাদের ফেলে আসা বাড়ি-ঘরে ফিরে যাওয়ার অধিকার চায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলছে, গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের কাছে পাঁচটি জায়গায় প্রায় সতের হাজার মানুষ অবস্থান নিয়েছে। এরা সেখানে গাড়ির টায়ার জ্বালাচ্ছে এবং সীমান্তের প্রাচীরের দিকে মলোটভ ককটেল ছুঁড়ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইলি সেনাদের হাতে নিহতদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি বালকও রয়েছে।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এই সহিংসতার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে। হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ বলেছেন, তাঁরা এক ইঞ্চি ফিলিস্তিনি জমিও ইসরাইলের কাছে ছাড়বেন না।
তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনের কোন বিকল্প নেই এবং আমাদের ফিরে যাওয়ার অধিকার ছাড়া এই সংকটের কোন সমাধান নেই।’
গাজা-ইসরাইল সীমান্তে সব সময় ইসরাইলের কড়া সামরিক পাহারা থাকে। সেখানে ইসরাইল তাদের সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়িয়েছে।
ফিলিস্তিনিরা প্রতি বছরের ৩০ মার্চকে ‘ভূমি দিবস’ হিসেবে পালন করে। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ফিলিস্তিনিরা যখন তাদের জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তখন ইসরাইলি সৈন্যদের গুলিতে ছ’জন নিহত হয়।
ছ’সপ্তাহ ব্যাপী এই বিক্ষোভ শেষ হবে আগামী ১৫ মে, যেদিনটিকে ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা’ কিংবা বিপর্যয় দিবস হিসেবে পালন করে। ১৯৪৮ সালের ঐ দিনে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ফেলে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিল ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর।
ফিলিস্তিনিরা বহু দশক ধরে ইসরায়েলে তাদের ফেলে আসা বসত বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অধিকার দাবি করছে। কিন্তু ইসরায়েল এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি।