ফেসবুক ও টুইটার যাচাই করা হবে
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা আবেদনে আরো কঠোরতা
আরো কড়াকড়ি করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি। যে বা যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চান তাদের প্রত্যেকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পুরো ইতিহাস সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করতে চায় প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা আনা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে।
প্রস্তাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনকারীর ফেসবুক ও টুইটার একাউন্টের বিস্তারিত যাচাই করে দেখা হবে। আবেদনকারীকে এসব একাউন্টের বিপরীতে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। গত পাঁচ বছরে আবেদনকারীর সামাজিক সব পরিচয় (আইডেনটিটির) বিস্তারিত প্রকাশ করতে হবে। ইমিগ্রান্ট অথবা নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা আবেদনকারী উভয়ের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে। খবর অনলাইন বিবিসির।
নতুন এ প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ভিসা আবেদনকারীকে তাদের গত পাঁচ বছরের টেলিফোন নম্বর, ই-মেইল আইডি এবং যেসব দেশ সফর করেছেন তা জানাতে হবে। এতে তাদেরকে পরিষ্কার করে বলতে হবে, কোনো দেশ থেকে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে কিনা। স্পষ্ট করে জানাতে হবে তাদের কোনো আত্মীয় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা। তবে এসব শর্ত ওই সব দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না, যেসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ভিসা সুবিধা দিয়েছে। এমন দেশের মধ্যে রয়েছে বৃটেন, কানাডা, ফ্রান্স ও জার্মানি। এমন তালিকায় নেই ভারত, চীন ও মেক্সিকোর মতো দেশ।
উল্লেখ্য, ভিসা কড়াকড়িতে এই নিয়ম প্রস্তাব করা হয় গত মে মাসে। তখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যদি কোনো ব্যক্তির পরিচয় তা তার জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে যাচাইয়ের প্রয়োজন হয় তাহলে তারা যেন ওই ব্যক্তির সামাজিক মিডিয়ার খোঁজ নন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সন্ত্রাস মোকাবিলায় কঠোর অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যেসব বিদেশি প্রবেশ করছেন তাদের সঙ্গে যাতে কট্টরপন্থিরা প্রবেশ না করে তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারই প্রেক্ষিতে এমন প্রস্তাবনা করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। তাতে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান হারে যে হুমকি আসছে তার মোকাবিলার জন্য ভিসা আবেদনকে মানসম্মত স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। এবং এতে কাজ দেবে। এরই মধ্যে আমরা সব রকম ভিসা আবেদনকারীর যোগাযোগ বিষয়ক তথ্য, সফর সংক্রান্ত হিস্ট্রি, পারিবারিক সদস্যদের তথ্য, আগের ঠিকানা- এসব আহ্বান করছি। ভিসা আবেদনকারীর কাছ থেকে এসব বাড়তি তথ্য পাওয়ার ফলে তাদেরকে শনাক্ত করতে আমাদের জন্য সহজ হবে এবং প্রক্রিয়াটি শক্তিশালী হবে।
এই প্রস্তাবনাটি অনুমোদিত হতে হবে ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট অফিস থেকে। প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হওয়ার আগে জনগণ তাদের মতামত প্রকাশের জন্য দু’মাস সময় পাবে। তবে নাগরিক অধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো এমন নীতির নিন্দা জানিয়েছে। তারা এটাকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর আক্রমণ বলে আখ্যায়িত করেছে। বলা হয়েছে, এতে মুক্ত মত প্রকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।