অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন পুজদেমন
কাতালুনিয়ার নেতা কার্লেস পুজদেমনের জামিন একটি কারণে ঝুলে ছিল। অবশেষে ৭৫ হাজার ইউরো জমা দেওয়ায় মুক্তি পেলেন তিনি। তিনি যুক্তি মেনেই রাজনীতিক সংলাপের ডাক দিয়েছেন। বিদ্রোহের অভিযোগ নস্যাৎ করে জার্মানির এক আঞ্চলিক আদালত প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করে। প্রত্যাশা অনুযায়ী শুক্রবারই পুলিশের হেফাজত থেকে বেরিয়ে এসেছেন পুজদেমন। গত ২৫ মার্চ থেকে জার্মানির উত্তরে শ্লেসভিক হলস্টাইন রাজ্যের নয়ম্যুনস্টার শহরে আটক ছিলেন তিনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক আদালত চারটি শর্তে পুজদেমনকে জামিন দেয়। এর আওতায় তাকে ৭৫,০০০ ইউরো জমা দিতে বলা হয়েছিল। এই অর্থ জমা দেওয়ায় তিনি মুক্তি পেয়েছেন। তবে জার্মানি ছেড়ে যেতে পারবেন না পুজদেমন। বাসস্থান বদলালে আদালতকে জানাতে হবে। সপ্তাহে একবার সশরীরে নয়ম্যুনস্টার শহরের পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে হবে এবং আলাদা করে তলব করলেও তাঁকে উপস্থিত হতে হবে।
পুজদেমনের আইনজীবীরা মনে করিয়ে দেন, তিনি শুরু থেকেই জার্মানির বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা দেখিয়ে এসেছেন। জামিনে মুক্তির খবরের পরই তার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি বার্তা প্রকাশ করা হয়। তাতে লেখা ছিল, ‘আগামীকাল দেখা হবে। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।’ স্পেনের সরকার পুজদেমনের বিরুদ্ধে যে দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল, জার্মানির আদালত তার একটি মেনে নিয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগকে আমল দিলেও বিদ্রোহের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রত্যর্পণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, স্পেনের সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পুজদেমন স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন করেছিলেন। এর জন্য প্রায় ১৬ লক্ষ ইউরো ব্যয় করা হয়েছিল। তাই তার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ তছরূপের অভিযোগ আনা হয়েছে।স্পেনের সরকার জার্মানির আদালতের এই রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। তবে বিচারমন্ত্রী রাফায়েল কাটালা এই রায় মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপীল করা হবে কিনা, জার্মানির সরকারি কৌসুলি সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে জার্মানির আদালত স্পেনের সরকারের কাছে দুর্নীতির অভিযোগের সপক্ষে আরও তথ্যপ্রমাণ ও ব্যাখ্যা চেয়েছে।
জামিনে পুজদেমনের মুক্তির সম্ভাবনার খবর পেয়ে কাতালুনিয়া রাজ্যে অনেক মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে বৃহস্পতিবার রাতে কোনো মিছিলের খবর পাওয়া যায়নি। জার্মানির আদালত বিদ্রোহের অভিযোগ নস্যাৎ করে দেওয়ায় অনেক আইনি বিশেষজ্ঞ স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, শেষ পর্যন্ত পুজদেমনকে স্পেনে প্রত্যর্পণ করা হলেও বিদ্রোহের অভিযোগ ধোপে টিকবে না। সেক্ষেত্রে ৩০ বছরের কারদন্ডের বদলে তহবিল তছরূপের দায়ে শাস্তির মাত্রা অনেক কম হবে। এদিকে বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের এক আদালত কাতালুনিয়ার তিনজন প্রাক্তন মন্ত্রীকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে। তবে চতুর্থ জন এখনো পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধেও বিদ্রোহসহ একাধিক অভিযোগ এনেছে স্পেনের সরকার।