নতুন আইফনে ৬৪ বিটের মোবাইল প্রসেসর !
বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল সম্প্রতি আইফোন ৫এস ও আইফোন ৫সি নামে দু’টি নতুন মোবাইল বাজারে এনেছে। নতুন ও আপগ্রেডেড ফিচার হিসেবে এ৭ প্রসেসরকেও একই সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে এবং এ নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইফোন বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়ার মতো কিছু করেনি। আর যেসব নতুন সুবিধার কথা বলা হচ্ছে তা বর্তমান প্রসেসরগুলোতেই পাওয়া যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগের সিরিজ ‘আইফোন ৫’ এ ব্যবহৃত হয়েছে এ৬ প্রসেসর।
অ্যাপলের দাবি অনুযায়ী, এ৭ শুধু নতুন প্রযুক্তিই নয় বিশ্বের প্রথম ৬৪ বিটের মোবাইল প্রসেসর এটি। অ্যাপল যেখানে তাদের এ৭ প্রসেসরকে বিশ্বসেরা বলছে তখনই একদল প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এই প্রসেসরকে বৈপ্লবিক প্রসেসর নয় উল্লেখ করে অ্যাপলের দাবি উড়িয়ে দিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তির বিকাশে মোবাইল প্রসেসরের এই উন্নতি বিবর্তনেরই অংশ কিন্তু এটা কোনো বৈপ্লবিক পরিবর্তন নয়। অ্যাপলের এই প্রসেসরের সমান দক্ষতাসম্পন্ন প্রসেসর এলজি ও সনি নিজস্ব নির্মিত যেমন: কোয়ালকম, এনভিডিয়া ইত্যাদি ব্যবহার করে।
মোর ইনসাইটস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান বিশ্লেষক প্যাট্রিক মোরহেড বলেন, ‘অগ্রগামী উদ্যোগ হিসেবে এ৭ খুবই ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু এটা কোনো বৈপ্লবিক পরিবর্তন নয়।’
অ্যাপলের বক্তব্য অনুযায়ী, ডেক্সটপ কম্পিউটারের প্রসেসরে ৬৪ বিটের যে আর্কিটেকচার ব্যবহার করা হয়তেমনি স্মার্টফোনেও একই আর্কিটেকচার ব্যবহার করা হয়েছে এ৭ প্রসেসরে।
প্যাট্রিক অবশ্য বললেন ভিন্ন কথা। তার ভাষ্যমতে, অ্যাপল ৬৪ বিটের যে প্রচার চালাচ্ছে তা আদতে বাজারজাতকরণ কৌশল মাত্র। এই প্রসেসরের কারণে মোবাইল কিছুটা দ্রুতগতির হবে কিন্তু ৬৪ বিটে কাজ করতে ৪ গিগাবাইট র্যা ম প্রয়োজন হয়।
অ্যাপল এখন পর্যন্ত জনসমক্ষে জানায়নি যে, তাদের নতুন মোবাইলের র্যাম কত। আইফোন ৫ এ র্যাম ছিল এক গিগাবাইট। সেই জায়গায় নতুন এই মোবাইলে দুই গিগাবাইটই হতে পারে। যেসব প্রসেসর ৩২ বিটের সেগুলো ৪ গিগাবাইট র্যামের বেশি সমর্থন করতে পারে না। যেসব স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট বাজারে আছে সেগুলোর বেশিরভাগেরই দরকার দুই থেকে তিন গিগাবাইট র্যাম।
৬৪ বিট প্রসেসরের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ৬৪ বিট রেজিস্টারও দরকার হয়। কিন্তু এরজন্য সফটওয়্যার ডেভেলপারদের আলাদাভাবে কোড লিখতে এবং অ্যাপলিকেশন বানাতে হয় যাতে ৬৪ বিটে সঠিকভাবে কাজ করে। এখন আইফোন ৫এস একমাত্র ৬৪ বিট প্রসেসরযুক্ত আইওএস ডিভাইস। ৬৪ বিট প্রসেসরের কোনো সফটওয়্যার অন্য কোনো পুরাতন ফোনে কাজ করবে না। এমনকি আইপ্যাড এবং আইফোন ৫সি’তেও কাজ করবে না। আর এই কারণেই আইফোন ৫এস এর প্রসেসর ৬৪ বিট এবং ৩২ বিট দুটোই সাপোর্ট করবে। আর তা না হলে সব আইওএস ডিভাইসকে ৬৪ বিটের প্রসেসর লাগাতে হবে।
অ্যাপলের দাবি অনুযায়ী, পূর্বের এ৬ প্রসেসর ৩৪ বিটের হওয়ায় যে কাজ করা যেত না তা এ৭ প্রসেসরে করা যাবে এটি ৬৪ বিট হওয়ায়।
এ বিষয়ে প্যাট্রিক আরও বলেন, ‘আমরা এখনও এ৭ সম্পর্কে অতটা জানি না। এটা এখনও দেখতে ডুয়্যাল কোর চিপের মতোই লাগছে। তত্ত্বীয়ভাবে স্ন্যাপড্রাগন ৮০০ এর মতো কোয়াড কোর প্রসেসর যা এলজি জি২ এবং এক্সপেরিয়া আল্ট্রাতে ব্যবহৃত হয় তার কর্মক্ষমতা এ৭ প্রসেসরের চেয়েও বেশি হওয়ার কথা। এ এছাড়াও অ্যাপল এ৭ প্রসেসরের মধ্যে এম৭ কোরের যে সুবিধার কথা বলা হচ্ছে তা ইতোমধ্যেই কোয়ালকম টাইপ প্রসেসরগুলো দিচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়।’