মাহাথির-নাজিব লড়াই
মালয়েশিয়ায় আগামী ৯ মে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। দেশটির নির্বাচন কমিশন গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ওই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোট তাদের ৬১ বছরের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বিভিন্ন মিডিয়া। মনে করা হচ্ছে মাহাথির মোহাম্মদ ও নাজিব রাজাকের মধ্যে লড়াই হবে।
ক্ষমতাসীন জোটের প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক এই নির্বাচনে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছেন। তিনি তার বারিসান ন্যাশনাল (বিএন) জোটকে বিজয়ী করতে পারেন কিনা তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। একদিকে মালয়েশিয়ায় সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাতে মালয়েশিয়ানদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। সেই ক্ষোভ মিটিয়ে তিনি তাদের ভোট পাওয়ার জন্য লড়াই করছেন। অন্যদিকে তাকে ঘিরে ধরেছে কয়েক শত কোটি ডলার অর্থ দুর্নীতির অভিযোগ। রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে তিনি ওই অর্থ তার নিজের ব্যাংক একাউন্টে স্থানান্তর করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। এ অভিযোগ ক্রমশ জোরালো হয়েছে দেশে ও বিদেশে। আর এরই মধ্যে তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার বলে পরিচিত ড. মাহাথির মোহাম্মদ। মাহাথির নাকি নাজিব কাকে বেছে নেন মালয়েশিয়ার নাগরিকরা তা এখন সময়ই বলে দেবে। নাজিব রাজাকের বয়স ৬৪ বছর। তিনি আবারো ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার আশা করছেন। কিন্তু বিশ্লেষকরা কঠিন লড়াইয়ের পূর্বাভাষ দিয়েছেন। এই লড়াইটা আসছে তার মেন্টর বা পথপ্রদর্শক, তার সাবেক গুরু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তার বয়স এখন ৯২ বছর। তিনি ২০০৩ সাল পর্যন্ত ২২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। একটি সাধারণ সমাজ ব্যবস্থাকে তিনি এ সময়ে শিল্পোন্নত জাতিতে পরিণত হয়েছেন। ফলে তার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। যদি তিনি এবার নাজিবকে পরাজিত হয়ে ক্ষমতার মসনদে ফের বসতে পারেন তাহলে তিনিই হবেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ সময় মালয়েশিয়ায় সরব আলোচনা। গত সপ্তাহে যখন পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করেন নাজিব রাজাক তখন গুজবের অনেকটাই স্তিমিত হয়। নিশ্চিত হয়ে যায় মালয়েশিয়া নির্বাচনের পথে রয়েছে। মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মো. হাশিম আবদুল্লাহ এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলিছেন, নির্বাচন কমিশন বৈঠক করেছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পার্লামেন্ট বিলুপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। সেই হিসাবে আগামী নির্বাচন হবে ৯ই মে। প্রার্থীদেরকে ২৮ শে এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এর ফলে তারা নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ১১ দিন সময় পাবেন।