নিরাপত্তায় অবহেলার দায় নিলেন জাকারবার্গ
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহারের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের মুখোমুখি হয়ে নিরাপত্তায় অবহেলার দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন জনপ্রিয় এই সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ।
তিনি বলেছেন, ‘এটা স্পষ্ট যে, ফেসবুকের সুবিধাগুলো ক্ষতিকর কাজে ব্যবহার বন্ধে আমরা যথেষ্ট ব্যবস্থা নিইনি।’
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া থেকে ক্রমাগতভাবে ফেসবুকের অপব্যবহারের চেষ্টা চলছে বলে সিনেটরদের জানিয়েছেন জাকারবার্গ।
তিনি বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠানকে সর্বক্ষণ এর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। বিষয়টিতে তিনি তুলনা করেন অস্ত্র প্রতিযোগিতার সঙ্গে।
প্রায় আট কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে যাওয়ার ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ পায়, যা নিয়ে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে তদন্ত চলছে। এর ধারাবাহিকতায় মার্কিন সিনেটের বাণিজ্য ও বিচারবিভাগীয় কমিটির সামনে জাকারবার্গের ডাক পড়ে।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারের কৌশল নির্ধারণে ওই ফেসবুক গ্রাহকদের তথ্য ব্যবহার করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
মঙ্গলবার সেই শুনানিতে হাজির হয়ে সিনেটরদের প্রশ্নের জবাবে জাকারবার্গ বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রচার শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগের অভিযোগ নিয়ে তদন্তে থাকা স্পেশাল কাউন্সিল রবার্ট মুলার ফেসবুকের কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। মুলারের অফিসে যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে নিজে ছিলেন না জানিয়ে প্রকাশ্য শুনানিতে গোপনীয় ওই বিষয়ের বিস্তারিত বলতেও রাজি হননি তিনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুলারের দপ্তর রাশিয়ার ১৩ নাগরিক ও তিনটি কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনে। ওই কোম্পানিগুলোর একটি ইন্টারনেট গবেষণা সংস্থাও ছিল, যাকে ‘রাশিয়ার ট্রল ফার্ম’ নামেও ডাকা হয়।
মুলারের দপ্তরের অভিযোগ, রাশিয়ার ওই কোম্পানি মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ‘বিবাদের বীজ বপনের’ কৌশল নিয়েছিল।
শুনানিতে জাকারবার্গ বলেন, তার প্রতিষ্ঠান এখন ভুয়া অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করার জন্য নতুন কিছু টুলস নিয়ে কাজ করছে।
‘রাশিয়ায় কিছু মানুষ আছে যাদের কাজ হচ্ছে আমাদের কার্যক্রম, অন্যান্য ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম ও অন্যান্য ব্যবস্থাকে নিজেদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করা। এটা ঠেকাতে আমাদের চেষ্টা বাড়াতে হবে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে আরও বিধিনিষেধের মধ্যে না আনার বিষয়ে প্রথমদিকে খানিকটা অনঢ় থাকলেও পরে চাপের মুখে ‘সঠিক বিধিনিষেধকে’ স্বাগত জানানোর কথাও বলেছেন ৩৩ বছর বয়সী এ বিলিয়নেয়ার টেক টাইটান।
হাতিয়ে নেয়া তথ্য ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা সরিয়ে ফেলেছে, বিস্তৃত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই এ ধরনের কথায় বিশ্বাস করা ‘ভুল হবে’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।