দেশব্যাপী বাংলা বর্ষবরণে রঙিন উদযাপন

boishakhবিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বর্ণিল আয়োজনে আজ শনিবার দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ।
শনিবার রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক স্থানে নানা অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে নতুন বর্ষকে বরণ করে সর্বস্তরের জনগণ।
এদিন ভোরের অন্ধকার কেটে ১৪২৫ বাংলা বছরের নতুন সূর্যোদয়ে রাঙা প্রভাতের সূচনাতেই উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে বাংলার প্রতিটি প্রান্তর।
নতুন বর্ষকে বরণের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনতার প্রত্যাশা সুখী, শান্তিপূর্ণ ও সোহার্দপূর্ণ বছর হোক ১৪২৫ সালটি। যা আগামী দিনে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করবে।
প্রায় ছয় শতাধিক বছর আগে চালু হওয়া পহেলা বৈশাখ উদযাপন বাঙালির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে গত ছয় দশক ধরে দিবসটি পালনে নানা রঙ ও উচ্ছ্বাসের আমেজ ছড়িয়েছে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়।
পহেলা বৈশাখ সরকারি ছুটির দিনও। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা দেশের জনগণ ও সারা বিশ্বের বাংলাভাষীদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বর্তমান বাংলাদেশ ভারতের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত তৎকালীন সুবে বাংলা অঞ্চল থেকে ভূমি কর আদায়ের সুবিধার্থে মোগল সম্রাট আকবর খ্রিস্টিয় ১৫৫৬ সালে বাংলা বর্ষপঞ্জি চালু করেন। নববর্ষের প্রথম দিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী পহেলা বৈশাখে দেশের ব্যবসায়ীরা হালখাতা খুলেন এবং ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের মিষ্টিমুখ করান।
দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনে দেশের সর্বস্তরের জনগণ, বিশেষ করে তরুণরা দিনের আলো ফোটার পরই বাহারি পোশাক পরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন।রাজধানীর হাজার হাজার বাসিন্দা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ধানমণ্ডি লেক ইত্যাদি পরিচিত জয়গায় জড়ো হয়েছেন।
নতুন বছর উদযাপনের সবচেয়ে বর্ণিল আয়োজন হয়েছে রমনার বটমূলে। সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের আয়োজনে ভোরবেলায় শুরু হয় সেখানকার বর্ষবরণ। ছায়ানটের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে কবিগুরুর বিখ্যাত গান ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেন।
বৈশাখী উৎসবের অংশ হিসেবে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা বের করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবছর নিরাপত্তার কারণে পুলিশ শোভাযাত্রা ঘিরে থাকবে এবং সেখানে কেউ মুখোশ পরতে পারবেন না।
ঢাকাসহ দেশের বিভন্ন জায়গায় আয়োজিত বৈশাখী মেলায় দেখা যায় নারী-পুরুষ ও শিশুদের উপচেপড়া ভিড়। পুরুষরা পাঞ্জাবি-পাজামা, নারীরা লাল পেড়ে শাড়ি ও শিশুদের গায়ে শোভা পাচ্ছে বাহারি রঙের পোশাক।
বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে ঘরে, রেস্টুরেন্টে ও মেলায় খাওয়া হয় পান্তা ভাত। সাথে দেখা যায় ইলিশ ভাজা, ডাল, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ। কেউ কেউ আবার ইলিশের ওপর চাপ কমাতে শুটকির ভর্তা, কাঁচা মরিচ, পেয়াজ দিয়ে পান্তা ভোগ করেছে।
১৪২৪ সাল থেকে এ দিনটিতে সরকার বিশেষ ভাতা প্রদানের ঘোষণা দেয়। সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পহেলা বৈশাখে ভাতা দিতে উৎসাহ দিচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি ও রেডিওতে দিনব্যাপী নানা বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার হচ্ছে। সেই সাথে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বর্ণিল সব অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। -ইউএনবি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button