হামলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ ছিল না: থেরেসা মে
সিরিয়ায় হামলা চালানো ছাড়া বিকল্প কোনো পথ ছিল না বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর থেরেসা মে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের আমেরিকান এবং ফরাসি মিত্রদের সঙ্গে একযোগ কাজ করছি।
সিরিয়ার হামলা চালাতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দেন থেরেসা মে।
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষনে মে বলেন, ‘সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের সামর্থ্য ধ্বংস করতে এবং তা ব্যবহার হতে নিবৃত রাখতে সমন্বিত হামলা চালানোর জন্য আমি ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমি লড়াইয়ের জন্য আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সিদ্ধান্তটি আমি হালকাভাবে নেইনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ আমি মনে করি এই পদক্ষেপটি ব্রিটেনের জাতীয় স্বার্থে কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে সিরিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক হওয়ার জন্য আমরা রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারকে অনুমতি দিতে পারি না। আমাদেরকে একটি বিকল্প পথ বেছে নিতে হয়েছে।’
গত শনিবার সিরিয়ার ডুমাতে রাসায়নিক অস্ত্র হামলায় শিশুসহ অন্তত ৭৫ জন নিহত হয়। আসলে এই আক্রমণে আন্তর্জাতিক মহলকে অবাক করেনি। কেননা সিরিয়ার শাসকদের তাদের নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর এবং ঘৃণাত্মক ভাবে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ইতিহাস রয়েছে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহী অধ্যুষিত এলাকায় গত সপ্তাহের রাসায়নিক অস্ত্র হামলার জবাবে শুক্রবার বাশার সরকারের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান শুরুর নিদের্শ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফ্রান্স ও ব্রিটেন একযোগে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্থাপনায় বোমা হামলা চালানো শুরু করেছে।
পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোট তিনটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। একটি হচ্ছে দামেস্কের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র প্রস্তুতকারী একটি গবেষণাগার। অন্য দুটি হোমসে রাসায়নিক অস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র ও রাসায়নিক অস্ত্রের যন্ত্রাংশ রক্ষণ কেন্দ্র।
হামলায় মার্কিন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
এদিকে, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভির খবরে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার শহর হামায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর বিমান হামলায় এখনো পর্যন্ত তিনজন বেসামরিক লোক আহত হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সিরিয়া সরকারের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্যে এই আঘাত হানা হচ্ছে। এই হামলা ততদিন পর্যন্ত চলবে যতদিন না পর্যন্ত আসাদ বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ না করবে।
রাসায়নিক হামলার জন্য আসাদকে দায়ী করে ট্রাম্প বলেছেন, এই ধরনের হামলা কোনো মানুষের কাজ নয়, একটি অসুরের করা অপরাধ। রাসায়নিক অস্ত্রের উৎপাদন, বিস্তার এবং ব্যবহারের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে বাধা দেওয়াই আজকে রাতে আমাদের নেওয়া সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য।