যে সব বাবা ভারতে ধর্ষণে অভিযুক্ত
ভারতে বহু কাল ধরেই স্বঘোষিত ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা অন্যান্য যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এবং আজও উঠছে।
জোড়া ধর্ষণে অভিযুক্ত রাম রহিমের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তার ঠিক আট মাস পরেই বুধবার নাবালিকা ধর্ষণে অভিযুক্ত আসারামকে যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছেন আদালত।
সাম্প্রতিক কালের এমনই কয়েক জন অভিযুক্ত ধর্মগুরুর কথা এক নজরে।
বাবা পরমানন্দ
যৌন নির্যাতনের দায়ে গত বছর ২৪ মে উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকির পুলিশ গ্রেফতার করে রাম শঙ্কর তিওয়ারি ওরফে বাবা পরমানন্দকে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার নামে নারীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালাতেন তিনি। তার বারাবাঁকির আশ্রমে তল্লাশি চালিয়ে পর্নোমুভির সিডি, নারীদের অশ্লীল ভিডিও এবং অশ্লীল পত্রপত্রিকা উদ্ধার করে পুলিশ।
সন্ত রামপাল
ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগে ২০১৪ সালের নভেম্বরে হরিয়ানার সন্ত রামপালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিয়মিতই তিনি শয্যাসঙ্গিনী বদল করতেন বলে পুলিশি তদন্তে উঠে আসে।
নিত্যানন্দ
একাধিক ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ২০১২ সালের জুনে বেঙ্গালুরুর আশ্রম থেকে ধর্মগুরু নিত্যানন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এক তামিল নায়িকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ভিডিও সামনে আসায় তাকে নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়।
সন্ত স্বামী ভীমানন্দজী মহারাজ
দেহব্যবসা চালানোর অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের চিত্রকূটের শিব মুরাত দ্বিবেদী ওরফে স্বামী ভীমানন্দজি মহারাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৯৯৭ সালে লাজপত নগর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
স্বামী গঙ্গেশানন্দ
ধর্ষণের চেষ্টা করায় কেরালের তিরুঅনন্তপুরমে স্বামী গঙ্গেশানন্দ ওরফে হরি স্বামীর যৌনাঙ্গ কেটে নিয়েছিলেন এক তরুণী। তার অভিযোগ ছিল, সাত বছর ধরে লাগাতার ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু তাকে ধর্ষণ করেন।
হরি স্বামী নিজেকে কোল্লমের চাত্তাম্বি স্বামী আশ্রমের আবাসিক বলে দাবি করেছিলেন। যদিও পরে পুলিশ জানায় ওই আশ্রমের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই ছিল না।
স্বামী বিকাশানন্দ
জব্বলপুরের বেশ প্রভাবশালী ধর্মগুরু বিকাশ জোশী ওরফে স্বামী বিকাশানন্দ। যৌন নির্যাতন, পর্নো সিনেমা বানানোসহ একাধিক অভিযোগে ২০০৬ সালে ধরা পড়েন তিনি।
২০১৬ সালে জব্বলপুরের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। এখনও তিনি জেলেই রয়েছেন।
গুরমিত রাম রহিম
১৫ বছর আগে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ করেছিলেন, এই অভিযোগে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত গতবছর ২৫ অগস্ট গুরমিত রাম রহিম সিংহকে দোষী সাব্যস্ত করে। ওই রায়ের পর গুরমিতের শিষ্যদের তাণ্ডবে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়। নষ্ট হয় কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি। এর পর রোহতক জেলে বসে আদালতের বিশেষ সেশন। সেখানে ২০ বছরের কারাদণ্ড হয় গুরমিতের।
আসারাম বাপু
১৬ বছরের মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বরে ইনদওরের আশ্রম থেকে ধরা পড়েন আসারাম বাপু। ধর্ষণ, শ্লীলতাহানিতেও অভিযুক্ত তিনি। তারপর থেকে জোধপুর জেলেই ছিলেন তিনি।
বুধবার জোধপুরের তফসিলি জাতি ও জনজাতি আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার জরিমানা হয়েছে তার।