গাজায় ইসরাইলি গুলিতে ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত

gazaতেলআবিব থেকে জেরুসালেমে যুক্তরাষ্টের দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে গাজায় ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী ও ইসরাইলী বাহিনী মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এতে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ৩৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কমপক্ষে ৫০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতের মধ্যে ১৪ বছরের এক কিশোর ও হুইল চেয়ারে চলাচলকারী ব্যক্তি ও রয়েছেন বলে জানিয়েছে এএফপি।
বিক্ষোভ সমগ্র গাজায় ছড়িয়ে পড়েছে । ‘‘প্রত্যাবর্তনের মহামিছিলে” অংশগ্রহণের জন্য মসজিদ থেকে গাজা বাসির প্রতি আহবান জানানো হচ্ছে। রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
এদিকে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরাইলি বাহিনী গুলি ছুড়লে ৩৭ জন ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী নিহত হয়। পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
গাজার একজন বিজ্ঞান শিক্ষক বলেন, আমরা সীমান্ত অতিক্রম করব এবং ইসরাইলি ও বিশ্ববাসিকে বলব আমরা দখলদারিত্ব মেনে নেব না। তিনি আরো বলেন, আজ হয়তো অনেকে শহিদ হবে এবং আমরা বলব, দখলদারিত্বের অবশ্যই অবসান হবে।
গত ৩০ মার্চ শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ৬১ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে। তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
সোমবার সীমিত পরিসরে যুক্তরাষ্ট্র তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে তাদের দূতাবাস স্থানান্তর করবে। ইসরাইল রাষ্ট্রের ৭০ তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে তাদের দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন।
গত বছর ৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বে ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠে। ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুসালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী মনে করে। অন্যদিকে ইসরাইল ও সমগ্র জেরুসালেমকে তাদের দেশের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়াকে শতাব্দীর সেরা চপেটাঘাত বলে অভিহিত করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সমগ্র বিশ্বের নেতৃবৃন্দ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশক ধরে চলে আসা নিরপেক্ষতার লঙ্ঘন বলে মনে করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ইসরাইল জেরুসালেম দখল করে নেয়। এরপর এ নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বহু ফিলিস্তিনি মারা যান।
জেরুজালেমকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিরা উভয়েই তাদের মর্যাদার স্থান বলে মনে করে থাকেন। অন্যদিকে জেরুসালেমে ইসরাইলের দখলদারিত্বকে বিশ্ববাসী স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৯৩ সালে হওয়া ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি চুক্তির আওতায় জেরুসালেমকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার কথা থাকলেও ইসরাইল তা মেনে নেয়নি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button