ফিলিস্তিনের পক্ষে মার্কিন ইহুদিদের বিক্ষোভ

jewsফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন ইহুদিরা। একইসঙ্গে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। হোয়াইট হাউস ও ক্যাপিটল হলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ওয়াশিংটনের পেনিসেলভানিয়ায় এক বিক্ষোভ থেকে ফিলিস্তিনীদের ওপর ইসরাইলি সহিংসতা বন্ধেরও আহ্বান জানান তারা। ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে মার্কিন ইহুদিরা বলেছেন, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় তারা নিজেদের ইহুদি পরিচয় নিয়ে লজ্জিত।
ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরাইল নামের রাষ্ট্র। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনীকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকেই ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনীরা। এবারের কর্মসূচির শেষ ২ দিনে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে উঠলে ৬০ ফিলিস্তিনীকে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী। কেবল সোমবারের বিক্ষোভেই ৫৮ ফিলিস্তিনী ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়। আহত হয় ২৭০০ মুক্তিকামী। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে ইফনটনাউ নামের মার্কিন ইহুদিদের একটি সংগঠন। পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বরাবরই তারা সোচ্চার। গত মাসে ইসরাইলি দখলদারিত্ব ও মার্কিন ভূমিকার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এই অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপের ৩৭ কর্মী আটক হন।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইসরাইলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উপেক্ষা করে সোমবার জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করে যুক্তরাষ্ট্র। ঘটনার প্রতিবাদে ১শ ইহুদি ঘটনার প্রতিবাদে ওয়াশিংটনের ট্রাম্প টাওয়ার সংলগ্ন রাস্তা আটকে ২ ঘণ্টা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। ‘সহিংসতা বন্ধ করো’, ‘ফিলিস্তিনীদের স্বাধীনতার মধ্যেই ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নিহিত’, ‘আমরা একটি ভালোবাসার বিশ্ব গড়তে চাই’ লেখা টি শার্ট পড়ে বিক্ষোভে অংশ নেয় তারা। তারা দাবি তোলে দখলদারিত্বের দূতাবাসের বিপরীতে একটি স্বাধীনতার দূতাবাস প্রতিষ্ঠার।
ইসরাইলের প্রগতিশীল সংবাদমাধ্যম তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মার্কিন ইহুদিরা ফিলিস্তিনীদের ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞ ও দূতাবাস স্থানান্তরের সমালোচনা করে বলেছেন, ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণে তারা নিজেদের ইহুদি পরিচয় নিজেই লজ্জিত বোধ করছেন।
দূতাবাস উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে সোমবার ফিলিস্তিনীদের ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্পের ইসরাইল-ঘনিষ্ঠ জামাতা জ্যারেড কুশনার। বলেন, ‘গত মাস থেকে আজ পর্যন্ত যাদেরকে আমরা বিক্ষোভের নামে সহিংসতা উস্কে দিতে দেখছি, তারা শান্তির পক্ষের মানুষ নন। তারা শান্তির পথে বাধা’। তবে  ইফনটনাউ সংগঠনের পক্ষে  ফিলাডেলফেলিয়ার শিক্ষার্থী সারাহ ব্রামার মঙ্গলবারের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন ফিলিস্তিন পর্যন্ত বিস্তৃত’। সংগঠনের মুখপাত্র ইয়োনাহ লিবারম্যান টেলিফোনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে বলেন ‘আমাদের প্রশ্ন হলো, আপনি কোনদিকে থাকছেন’। আমেরিকান জিউস কমিটির ২০১৭ সালের একটি জরিপকে উদ্ধৃত করে তিনি জানান, মার্কিন ইহুদিদের ৮০ শতাংশই জেরুজালেমে ইসরাইলি দূতাবাস স্থানান্তরের বিপক্ষে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button