৩০ দফা বিবৃতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হল ওআইসি শীর্ষ সম্মেলন
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি’র জরুরি শীর্ষ সম্মেলন ৩০ দফা বিবৃতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
মুসলিম দেশগুলোর শীর্ষ নেতারা তাদের যৌথ বিবৃতিতে অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদী ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য জাতিসংঘের অঙ্গ-সংগঠন নিরাপত্তা পরিষদ, সাধারণ পরিষদ, মানবাধিকার পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতিতে ইসরাইলকে দখলদার ও অপরাধী হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে আমেরিকার সমর্থন নিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নৃশংস বর্বরতা চালাচ্ছে।
মার্কিন সরকার গত সোমবার তেলআবিব থেকে বায়তুল মোকাদ্দাসে দূতাবাস স্থানান্তর করার পর অধিকৃত ফিলিস্তিনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকার ওই পদক্ষেপের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। প্রতিবাদী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের হামলায় একদিনেই শহীদ হয়েছে ৬২ জন এবং আহত হয়েছে তিন হাজার জন।
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের নৃশংস গণহত্যার পর ওআইসি’র জরুরি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং মুসলমানদের এই জোট দূতাবাস স্থানান্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত এবং জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। মুসলিম দেশগুলোর শীর্ষ নেতারা বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বীকৃতিকে অবৈধ অবিহিত করে বলেছে, এটা ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাভাবিক অধিকার লঙ্ঘন এবং তাদের জাতীয়তা ও ইতিহাসকে অস্বীকার করার শামিল।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বায়তুল মোকাদ্দাসে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পদক্ষেপ আসলে আমেরিকা ও ইসরাইলের সম্প্রসারণকামী নীতিরই ফসল। আমেরিকা এমন সময় এ পদক্ষেপ নিয়েছে যখন আমেরিকা ও ইসরাইলের মদদপুষ্ট দায়েশ সন্ত্রাসীরা ইরাক ও সিরিয়ায় পরাজিত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের এই পরাজয়ের সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের সম্পর্ক রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।
এ ব্যাপারে ইরানের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হাসান হানি যাদেহ বলেছেন, “ইস্তাম্বুলে ওআইসি’র শীর্ষ সম্মেলন সব দেশের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মুসলিম বিশ্বের শান্তি কেড়ে নেয়ার জন্য আমেরিকা যেকোনো ন্যক্কারজনক কাজ করতে দ্বিধা করবে না। কারণ মুসলিম দেশগুলোতে যদি গোলযোগ, যুদ্ধ ও অশান্তি লেগে থাকে তাহলে পরোক্ষভাবে বর্ণবাদী ইসরাইলই লাভবান হবে এবং নিরাপদে থাকবে। এ কারণে মুসলিম দেশগুলোর নেতারা ইস্তাম্বুলে সমবেত হয়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় তাদের অবস্থান ঘোষণা করলেন। -পার্স টুডে