ফিলিস্তিনীদের ৭০ বছর ধরে ধোঁকা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র কথা রাখে না। কারণ তারা কথা দেয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য, রাখার জন্য নয়। ফিলিস্তিনী নেতা ইয়াসির আরাফাত থেকে ভেনিজুয়েলার হুগো শ্যাভেজ- সবাই এ কথা জানতেন।
মার্কিন আশ্বাসের যে কানাকড়িও দাম নেই- মাতৃভূমি হারানোর মূল্য দিয়ে তা বুঝেছে ফিলিস্তিনীরা। বিশ্বের আর কোনো জাতি এত ঠকেনি, এতটা ধোঁকা খায়নি।
একদিন দু’দিন নয়। বছরের পর বছর ঠকে আসছে ফিলিস্তিনীরা। গত ৭০ বছর ধরেই ধোঁকা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৫ মে, ১৯৪৮ সাল। একদিনে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনীর ঘর ভেঙে ইহুদিদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় আজকের ইসরাইল।
সীমাহীন অত্যাচার-নিপীড়ন করে নিজ ভূমি থেকে উৎখাত করা হয় এসব মানুষকে। পরিস্থিতি শান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বাস দেয়, ওয়াশিংটন তাদের অধিকারের বিষয়টি দেখবে। ঘটা করে আরও উন্নত ভূমি, আরও উন্নত জীবনের প্রতিশ্রুতি দেয়।
কিন্তু ফিলিস্তিনীদের প্রতি নিজেদের সেই পুনর্বাসন প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ ৭০ বছর পরে এসে লোকলজ্জা ভুলে প্রকাশ্যে ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দেশটি।
বর্তমানে ফিলিস্তিনের অধিকাংশ এলাকাই দখল করে নিয়েছে ইসরাইল। উৎখাত হতে হতে ফিলিস্তিন বলতে আজ বোঝায় গাজা ও পশ্চিম তীরের এক টুকরো জমিন।
ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মানচিত্র দেখলেই সেটা বোঝা যায়। ইসরাইল এসব জায়গায় স্থাপন করেছে অবৈধ বসতি এবং এখনও তা অব্যাহত রেখেছে। উদ্বাস্তু ২০ লাখ ফিলিস্তিনীর প্রায় ৭০ শতাংশই আজ শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত।
যে ভূমি থেকে তাদেরকে জোরপূর্বক উৎখাত করা হয়েছে, সেটাই আজকের ইসরাইল। ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজার চলতি সপ্তাহের বিক্ষোভগুলো ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ভয়াবহ। নিজেদের বাপ-দাদার ভূমি জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস সরানোর পদক্ষেপ মানতে পারেনি তারা। তাই এর বিরুদ্ধে ইসরাইলের তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা সীমানা প্রাচীরের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশে হাজির হয় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনী। প্রতি বছরের মতো চলতি বছরের ৩০ মার্চ নিজেদের ভূমিতে ফেরার ‘মহান প্রত্যাবর্তন মিছিল’ নামে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়।