পম্পেও’র প্রস্তাবিত চুক্তি মারাত্মক: জনসন
ইরানের মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসনের ‘প্লান বি’ নিয়ে আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। ইরান বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির নতুন এ পরিকল্পনা পম্পেও শিগগিরই প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এদিকে ইরানের ওপর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন মাইক পম্পেও।
সোমবার ওয়াশিংটনে এক ভাষণে তিনি বলেন, এ নিষেধাজ্ঞার পর নিজেদের অর্থনীতি বাঁচিয়ে রাখতে হিমশিম খাবে ইরান। ইরানের ‘আগ্রাসন’ রুখতে পেন্টাগন ও আঞ্চলিক মিত্রদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবেন পম্পেও। এদিকে, ইরানের সঙ্গে নতুন কোনো চুক্তির জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যেসব শর্ত দিয়েছেন তার বাস্তবায়নযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন।
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে তিনি বলেন, পম্পেওর দেয়া শর্তগুলো একটি চুক্তির মধ্যে নিয়ে আসা অসম্ভব ব্যাপার। মাইক পম্পেও ইরানের বিরুদ্ধে ইতিহাসের কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে তেহরানের সঙ্গে নতুন যেকোনো চুক্তি সইয়ের জন্য ১২টি শর্ত আরোপ করার কয়েক ঘণ্টা পর জনসন এ প্রতিক্রিয়া জানান।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি চুক্তির মধ্যে এতগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয়। জনসন বলেন, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, দেশটির কথিত অসদাচরণ, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের কথিত নাশকতামূলক তৎপরতা, পরমাণু কর্মসূচি ইত্যাদি সবকিছু একটি চুক্তিতে আনতে গেলে তা হবে মারাত্মক কঠিন কাজ। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এর পরিবর্তে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত বর্তমান পরমাণু সমঝোতাকে অনেক ভালো চুক্তি বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই সমঝোতার মাধ্যমে একদিকে বিশ্ব নিশ্চিত হয়েছে যে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না। এ সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। গত ৮ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে তার দেশকে সরিয়ে নেন। ২০১৫ সালে পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত ওই সমঝোতা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ার ফলে এটি একটি আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে বিবেচিত। যুক্তরাষ্ট্র এ সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও এতে স্বাক্ষরকারী তিন ইউরোপীয় দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই তারা এটি বাস্তবায়ন করে যাবে। অন্যদিকে তেহরান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইরানের কাঙ্ক্ষিত স্বার্থ রক্ষিত না হলে এ সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে দেশটি পূর্ণ মাত্রায় তার বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি আবার শুরু করবে।