মিয়ানমারকে আইসিসির কাঠগড়ায় তুলতে চাপ দেবে ব্রিটেন

ICCরাষ্ট্রীয় সমর্থনে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূল এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর ইস্যুতে ব্রিটেন অবশ্যই সমর্থন দেবে। দেশটির ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট সিলেক্ট কমিটির পার্লামেন্ট সদস্যরা এ কথা জানিয়েছেন।
এ সময় তারা মিয়ানমারকে দেয়া ব্রিটেনের সাহায্যের একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আহ্বান করেন। ২০১৮ সালে মিয়ানমারকে সাহায্যের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি পাউন্ড। মূলত এই সাহায্যের ব্যাপারে ব্রিটেন তখনই সম্মত হয়েছিল, যখন মিয়ানমার গণতান্ত্রিক শাসনে উত্তরণের পথে এগোচ্ছিল। ডেভেলপমেন্ট কমিটি আরো জানায়, গণতন্ত্রে উত্তরণ বা প্রকৃত শান্তি প্রক্রিয়া ইত্যাদি কোনো কিছুই সেখানে চলমান নেই। এমনকি ব্রিটেনের সাহায্য প্রকল্পের কর্মকর্তাদেরও দেশটিতে পরিদর্শন করতে দেয়নি। একেবারে শেষ মুহূর্তে তাদের ভিসা দিতে অস্বীকার করা হয়।
এর আগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে চাইলেও তা কার্যকর হয়নি। কারণ জাতিসঙ্ঘে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব চীনের ভেটো দেয়ার কারণে বাতিল হয়ে যায়। তবে ডেভেলপ কমিটি বলছে, চীনা ভেটোর পরও ব্রিটেন ও তার মিত্ররা এখনো জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠাতে এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের ওপর আর্থিক অবরোধ আরোপের দাবি জানাবে। উল্লেখ্য মিয়ানমার আইসিসির সদস্য নয়।
গত মাসে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের দূতেরা মিয়ানমার পরিদর্শনের পর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান। গত বছরের আগস্টে শুরু হওয়া নৃশংসতায় এ পর্যন্ত সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে পালিয়ে যায়। হত্যার শিকার হয় হাজার হাজার রোহিঙ্গা।
কমিটির সদস্যরা এ জন্য দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচিকে দায়ী করে বলেছেন, তিনি নিজেই এ সমস্যার একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজেই এর প্রতিকারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এমনকি দায়ীদের উদ্দেশে তিনি একটি কড়া বিবৃতিও দিতে পারেননি। কমিটি জানায়, মিয়ানমারকে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, তাদের সেনাবাহিনীর এই কর্মকাণ্ড এবং তার প্রেক্ষিতে দেশটির সরকার ও সমাজের নিশ্চুপ থাকার দায় তাদের শোধ করতে হবে।
ব্রিটিশ সরকার এখন পর্যন্ত অবশ্য মিয়ামমারের সাথে সব ধরনের বাণিজ্য এবং কৌশলগত সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। তবে দেশটির সেনাবাহিনীকে দেয়া একটি তহবিল তারা বন্ধ করে দিয়েছে। ডেভেলপ কমিটির চেয়ারপারসন স্টিফেন টিগ বলেন, ব্রিটিশ করদাতাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, তাদের অর্থ এমন কোনো সরকারের কাছে যাচ্ছে না, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। আর যদি এমনটা না হয় তাহলে আমরা এমন প্রকল্প বন্ধ করে দেবো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button