গাজায় ব্যবহৃত ইসরাইলি সরঞ্জাম যুক্তরাজ্যের সরবরাহকৃত

ইসরাইলের কাছে রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করেছে ব্রিটেন

israelব্রিটেনের সমরাস্ত্র ঠিকাদাররা ইসরাইলের কাছে এ যাবৎকালের রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করেছে। ব্রিটিশ সরকারের প্রতিনিধি হয়ে প্রিন্স উইলিয়ামের ইসরাইল সফরের পরের দিনই এ খবর প্রকাশ পেল। গত মাসে ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যাকায় নৃশংসভাবে শতাধিক ফিলিস্তিনি হত্যা করে। এমন সময় দেশটিতে রাজপরিবারের এক জ্যেষ্ঠ সদস্যকে পাঠানোর বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার গ্রপগুলো।
গত শুক্রবার ব্রিটিশ সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী উইলিয়ামের কার্যালয় কেনসিংটন প্রাসাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২৪ জুন জর্ডান সফরের মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করবেন উইলিয়াম। এর কয়েকদিন পর তেল আবিব যাবেন তিনি। পরবর্তী তিনদিন জেরুজালেম, তেল আবিব এবং পশ্চিম তীরের রামাল্লায় কাটাবেন ব্রিটিশ রাজপুত্র। তবে উইলিয়াম কোথায় যাবেন এবং কার সঙ্গে দেখা করবেন, সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানায়নি কেনসিংটন প্রাসাদ।
অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে ‘ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট আর্মস ট্রেড’ জানিয়েছে, গত বছর ইসরাইলের কাছে ২২১ মিলিয়ন (২২ কোটি ১০ লাখ) পাউন্ডের অস্ত্র বিক্রির লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল ঠিকাদারদের। এর মধ্য দিয়ে ইসরাইল যুক্তরাজ্যের অষ্টম বৃহত্তম অস্ত্র বাজারে পরিণত হলো। এর আগে আগের বছর ৮৬ মিলিয়ন (আট কোটি ৬০ লাখ) পাউন্ডের অস্ত্র বিক্রি করা হয়েছিল ইসরাইলের কাছে। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে ইসরাইলের কাছে ৩৫০ মিলিয়ন (৩৫ কোটি) পাউন্ডের সমরাস্ত্র বিক্রি করেছে যুক্তরাজ্য।
গত বছর ইসরাইলের কাছে যেসব সমরাস্ত্র বিক্রি করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার মতো অস্ত্র, ছোট অস্ত্রের গুলি, ক্ষেপণাস্ত্র ও স্নাইপার রাইফেল। ২০১৬ সালে যেসব অস্ত্র বিক্রি করা হয়েছিল, তার মধ্যে রয়েছে- প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কামান, আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যাসল্ট রাইফেলের যন্ত্রাংশ, গ্রেনেড লঞ্চারের যন্ত্রাংশ ও দাঙ্গা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
ব্রিটিশ সরকারের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালের যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করা হয় এমন ১২টি অস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করেছে যুক্তরাজ্য। ২০১০ সালে সে সময়কার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ড বলেছিলেন, ‘অনেকটা নিশ্চিতভাবেই’ বলা যায়, গাজায় হামলা চালাতে ব্যবহৃত ইসরাইলি সরঞ্জামাদিগুলো যুক্তরাজ্য সরবরাহকৃত।
যুক্তরাজ্য ইসরাইলকে ঘনিষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে। তবে সম্প্রতি কয়েকটি বড় ইস্যুতে যুক্তরাজ্যকে প্রকাশ্যে ইসরাইলের সমালোচনা করতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ পশ্চিমা মিত্রের মতোই ব্রিটিশ সরকারও যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইলি দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাছাড়া ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় শক্তিধর দেশের স্বাক্ষর করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসা নিয়েও মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের বিরোধ রয়েছে। ওই চুক্তি থেকে সরে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসা করেছিল ইসরাইল। তবে যতই মতানৈক্য থাকুক না কেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ইসরাইলের প্রতি লন্ডনের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button