ইমিগ্রেশন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ব্রিটেন
তানজির আহমেদ রাসেল: ইমিগ্রেশন ইস্যুতে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে বৃটেন। কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক ট্রেজারার লর্ড আশক্রফট কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে ব্রিটেনের ৬০ শতাংশ মানুষ মনে করে ইমিগ্রেশনের কারণে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ১লা সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জরিপের প্রতিবেদনে তিনি জানিয়েছেন, ইমিগ্রেশনের কারণে ব্রিটিশ জনগণের চাকুরি পাওয়া নিয়ে উৎকন্ঠা বেড়েছে এবং সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে, গত ১৭ই জুলাই দ্যা অফিস ফর বাজেট রেসপনসিবিলিটি অপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, ২০৬৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর অতিরিক্ত ১ লাখ ৪০ হাজার ইমিগ্র্যান্ট প্রয়োজন হবে ব্রিটেনের। লর্ড আশক্রফটের জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ছয় জনের মধ্যে মাত্র একজন মনে করেন ইমিগ্রেশনের উপকারের পাল্লা অপকারের চেয়ে ভারি। যে ২০ হাজার লোকের মধ্যে জরিপটি পারিচালিত হয়েছে তাদের অনেকেই ইমিগ্র্যান্টদের কারণে চাকুরি হারানো এবং স্যোশাল হাউজিংয়ে স্থান না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। অর্থনীতির পর ইমিগ্রেশনকে দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। জরিপে অংশ নিয়ে ৭৭ শতাংশ লোক ব্যাপকভাবে ইমিগ্রেশন কমিয়ে তাদের চাকুরি পাওয়ার পথকে সুগম এবং সরকারী সেবা খাতে চাপ কমানোর পক্ষে মতামত দিয়েছেন। পুরুষদের চেয়ে মহিলদেরকে ইমিগ্রেশনের বিরুদ্ধে বেশী সোচ্চার দেখা গেছে। ২১ শতাংশ পুরুষের বিপরীতে ১৪ শতাংশ মহিলা ব্রিটেনে ইমিগ্রেশনকে সমর্থন করেছেন। রাজনৈতিক দলের ভোটারদের মধ্যেও ইমিগ্রেশন ইস্যুতে বিভাজন দেখা যায়। কনজারভেটিভ পার্টির ৬২ শতাংশ ভোটার, লেবার পার্টির ৪৮ শতাংশ, লিবডেমের ৩৯ শতাংশ আর ইউনাইটেড কিংডম ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টির (ইউকিপ) ৯১ শতাংশ ভোটার মনে করেন ইমিগ্রেশনের কারণে ব্রিটেন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্যেও ইমিগ্রেশন ইস্যুতে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেখানো হয়েছে প্রতিবেদনে। কর্মজীবী ও মধ্যবয়সী মানুষের ৯০ শতাংশ মনে করেন ইমিগ্রেশন হচ্ছে ব্রিটেনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ; আর যারা গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে সরকারি চাকুরি করছেন তাদের ৮০ শতাংশই মনে করেন ইমিগ্রেশনের কারণে ব্রিটেন উপকৃত হয়েছে।
এদিকে, বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সেবা নিশ্চিত করতে আগামী ৫০ বছরে ব্রিটেনের জন্য আরও ৭০ লাখ ইমিগ্র্যান্ট প্রয়োজন। অবশ্য পাশাপাশি আরো একটি তথ্য প্রকাশ করে অফিস ফর বাজেট রেসপনসিবিলিটি সতর্ক করে বলেছে, বয়স্কদের সেবা খাত স্বাস্থ্য বিভাগের উপর যে চাপ সৃষ্টি করবে তা মোকাবেলা করতে সরকারকে আরো ১৯ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় সংকোচন করতে হবে; অথবা জনগণের উপর করের বোঝা বাড়াতে হবে।