ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক আরোপ
যুক্তরাষ্ট্রকে সমুচিত জবাব দেবে কানাডা-ইইউ
ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছে জি-৭ ভুক্ত অন্য দেশগুলো। শনিবার কানাডার হুইসলার রিসোর্টে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীর সম্মেলন শুরু হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ মনুচিন অন্য দেশগুলোর ক্ষুব্ধ অর্থমন্ত্রীর সমালোচনার মুখে পড়েন। সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কানাডা যুক্তরাষ্ট্রকে সমুচিত জবাব দেয়ার হুমকি দেয়।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, নতুন বাণিজ্য কর ঘোষণা করার পর কানাডায় বিশ্বের উন্নত সাত দেশের সংগঠন জি-৭-এর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ এমনুচিন।
ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো মাইরি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কর আরোপ করার সিদ্ধান্ত ‘আইনত অগ্রহণযোগ্য, রাজনৈতিকভাবে অন্যায্য ও অথনৈতিকভাবে ভয়ঙ্কর।’ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা জি-৬ একসঙ্গে চললেও যুক্তরাষ্ট্র একাই সবার বিরুদ্ধে চলছে। এতে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি বাড়ছে।’ ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মেয়ার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও মেক্সিকোর কাছ থেকে ইস্পাত আমদানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর আরোপ করবে। মাসজুড়ে কার্যকর ছাড় দেয়ার বিষয়টি শেষ করে দেশটি এই ঘোষণা দেয়। ব্রুনো লে মেয়ার বলেন, ‘আমাদের সবার লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন তাদের করারোপকে বৈধতা দেয়ার জন্য কোনো সমঝোতা বিতর্কেই যেতে চাইছে না।
ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রাখা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোম্পানিগুলোকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে এভাবে কর আরোপের ঘোষণায় ইউরোপীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ব্রুনো লে মেয়ার বলেন, তিনি এমনুচিনকে কয়েকটি নির্দিষ্ট ফরাসি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দেবেন। যাতে কোম্পানিগুলো ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারেন। তবে তিনি কোম্পানিগুলোর নাম বলতে অস্বীকার করেছেন। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ইতালিতে মুদ্রাবাজার এরই মধ্যে অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে নতুন বাণিজ্য উত্তেজনা সেটি আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে।
ব্রুনো লে মেয়ার বলেন, ‘আমরা ইতালিতে নতুন সরকার গঠনের ঘটনাকে স্বাগত জানাই। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইউরো অঞ্চলকে শক্তিশালী করার জন্য তিনি দ্রুত ইতালির অর্থমন্ত্রীকে পাশে পাবেন।
অবশ্য সব হুমকি উড়িয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরে অন্য দেশগুলোর দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই শুল্কারোপ যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত নির্মাতাদের রক্ষা করবে। জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
এ সময় ট্রাম্প উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য স্থানে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। ‘এখন সময় স্মার্ট হওয়ার’- এমন কথাও বলেন ট্রাম্প।