আফগানিস্তানের কাছে হারলো বাংলাদেশ
মাত্র ১৩৫ রানের টার্গেট দেওয়ার পর অবিশ্বাস্য কিছু করতে হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। বরং স্বাচ্ছন্দ্যে ম্যাচ জিতেছে আফগানিস্তান, সঙ্গে সিরিজও। ১৮.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১৩৫ রান করে তারা। ৬ উইকেটের এই হারে বাংলাদেশ এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ হারল।
প্রথম ওভারেই প্রতিপক্ষকে একটি জীবন দিয়েছিল বাংলাদেশ। নাজমুল ইসলাম অপুর তৃতীয় বলে মোহাম্মদ শাহজাদের ব্যাট ছুঁয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসের দিকে ছুটেছিল বল। কিন্তু বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক নিতে পারেননি ক্যাচ। অবশ্য আবু হায়দার রনি ৩৮ রানের জুটি ভাঙেন শাহজাদকে ফিরিয়ে। ১৮ বলে ৪টি চার ও ১টি ছয়ে ২৪ রান করেন আফগান ওপেনার।
তারপর বাংলাদেশ উসমান ঘানিকে ফিরিয়ে পেয়েছে দ্বিতীয় উইকেট। সামিউল্লাহ সেনওয়ারির সঙ্গে এই ওপেনার করেন ১৯ রান। ৩১ বলে ২১ রান করে মিড অফে সৌম্যর ক্যাচ হন ঘানি। উইকেট নেন রুবেল হোসেন। ১৪তম ওভারের চতুর্থ বলে স্টাম্পিং হন আসগর স্তানিকজাই (৪)।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আলোচিত রশিদ খানের স্পিনে স্কোরবোর্ডে ভালো রান জমা করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের মতো মঙ্গলবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও দুর্দান্ত বল করেছেন আফগান স্পিনার। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৪ রান করে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে ৪৫ রানে হারার পর দলে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। আবু জায়েদ রাহী ও আবুল হাসান বাদ পড়েছিলেন। একাদশে সুযোগ পান রনি ও সৌম্য সরকার। সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ মঙ্গলবার ধীর শুরু করে। প্রথম ওভার মুজিব উর রহমানকে দেখেশুনে খেলেছেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। মাত্র একটি রান আসে লিটনের ব্যাটে। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে শাপুর জাদরানের শিকার হন এই ওপেনার। ডিপ স্কয়ার লেগে লিটনকে সহজ ক্যাচে ফেরান রশিদ।
ক্রিজে নামেন সাব্বির। তামিমের সঙ্গে তার জুটি ছিল মাত্র ২০ বলের। ২৯ রানে তাদের বিচ্ছিন্ন করেন মোহাম্মদ নবী। ৯ বলে ৩ চারে ১৩ রান করে লং অনে সামিউল্লাহ সেনওয়ারির সহজ ক্যাচ হন সাব্বির।
২ উইকেট হারানোর পর তামিম ও মুশফিক ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু জুটিটাকে পঞ্চাশের ঘরে নিয়ে যেতে পারেননি তারা। ৩২ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন দুজন। দশম ওভারের পঞ্চম বলে স্টাম্পিং হয়ে নবীকে উইকেট দেন মুশফিক। তার ১৮ বলে ২২ রানের দ্বিতীয় সেরা ইনিংসে আছে একটি করে চার ও ছয়।
মাঠে নেমেই প্রথম বলে ছয় মারেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু দারুণ শুরু ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ৮ বল খেলে ১৪ রানে করিম জানাতের কাছে বোল্ড হন এই অলরাউন্ডার। তামিমের সঙ্গে তার জুটি মাত্র ১৮ রানের।
ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তামিমকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। এ জুটি ভেঙে উইকেট উৎসব শুরু করেন রশিদ। দুজনের জুটি ছিল মাত্র ৩.১ ওভারের, রান যোগ করেন ৮টি। রশিদ তার তৃতীয় ওভারে ৩ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশের ৩ উইকেট নেন।
ওই ওভারের প্রথম বলে সাকিব লং অনে নাজিবউদ্দৌলা জাদরানের ক্যাচ হন। ৭ বলে ৩ রান করেন বাংলাদেশি অধিনায়ক। তারপর চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ফিরেছেন তামিম ও মোসাদ্দেক হোসেন। তামিম ৪৮ বলে ৫ চারে ইনিংস সেরা ৪৩ রানে বোল্ড হন। মোসাদ্দেক খুলতে পারেননি রানের খাতা, রশিদের তৃতীয় শিকার হন এলবিডাব্লিউ হয়ে। রনি শেষ বল ঠেকিয়ে হ্যাটট্রিক বঞ্চিত করেন টি-টোয়েন্টির শীর্ষ বোলারকে।
রশিদ তার পরের ওভারে সৌম্য সরকারকে ৩ রানে আসগর স্তানিকজাইয়ের ক্যাচ বানান। ৪ ওভারে ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন গত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।
১০৮ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশ রনি ও নাজমুলের অপরাজিত জুটিতে ১৩ বলে ২৬ রান করে।
১৪ বলে ১ চার ও ২ ছয়ে ২১ রানে টিকে ছিলেন রনি, নাজমুলের ৬ রান। রশিদের পর আফগানিস্তানের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার নবী নেন ২ উইকেট।