জয়ের পাশে উপস্থিতি : সমালোচনার ঝড় এবং সাকিবের জবাব

Sakibবাংলাদেশের রাজনীতিতে সাকিব আল হাসান! গত দু’দিন ফেইসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা-সমালোচনা। নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশায় সফলদের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন মতবিনিময়ে অংশ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এসব অনুষ্ঠানে জয় সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।
গত শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এমন একটি অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পাশে সাকিব আল হাসানের উপস্থিতি ও তার বক্তব্য- সাকিবের রাজনীতিতে আসার প্রসঙ্গটিকে আরো জোরালো করেছে। তবে ফেইসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটে জয়ের পাশে সাকিবের উপস্থিতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। রাজনীতিতে জড়িত না থেকেও শিল্পী, কবি, অভিনেত্রীদের মত সাকিব আল হাসানেরও সংসদ সদস্য হওয়ার খায়েশ আছে কি-না? এমন কটূক্তিও করেছেন কেউ কেউ।
বিশেষ করে ওই অনুষ্ঠানে জয় তিন দিনের মধ্যে চমক দেখাবেন বলে ঘোষণা দেয়ায় সাকিবের রাজনীতিতে আসার খবরকে আরো জোরালো করেছে। ওই অনুষ্ঠানে ৯০ শতাংশ মুসলিমের দেশ বাংলাদেশে মাদ্রাসা ছাত্র কমানোর ঘোষণা অর্থাৎ ইসলাম শিক্ষাকে সংকুচিত করার কথা বলায় অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানের উপস্থিতি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, ক্রিকেটপ্রেমী কেউই।
তবে শুক্রবার রাতে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা অলরাউন্ডার সাবিক আল হাসান নিজস্ব টুইট বার্তায় লিখেছেন, ক্রিকেট বোর্ড প্রেসিডেন্টের অনুরোধে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘রূপকল্প ২০২১’ অনুষ্ঠানে যেতে হয়েছিল। এদিকে সাকিব আল হাসানের এই টুইটবার্তাটি শনিবার থেকেই ফেসবুক থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্লগেও ছড়িয়ে পড়েছে। এসব সমালোচনায় অধিকাংশই এই টুইটবার্তায়  প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ‘চমক’ প্রশ্নবিদ্ধ হল বলে মন্তব্য করা হয়েছে। তাহলে কি সাকিবকে মতের বিপরীতে ওই অনুষ্ঠানে যেতে হয়েছে?
তবে সমালোচকরা বলছেন, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছাকাছি থেকে নানান সুবিধা নেন। অতীতে এমনটিই দেখা গেছে। কিন্তু সাকিব আল হাসান শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলোয়াড়। তার জনপ্রিয়তা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ক্রিকেট খেলুড়ে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে রয়েছে। ক্ষমতাসীনদের বলয়ে এসে তার কোন সুবিধা নেয়ার দরকার নেই। তারপরও একটি রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে সাকিবের সরব উপস্থিতি তার ভক্তদের চরম হতাশ করেছে।
টুইটার ও ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোত ‘সাকিব’ জয়ের ‘চমক’ কি-না এমন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে এক টুইটবার্তায় সাকিব আল হাসান মুখ খোলেন। সুচিন্তা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘রূপকল্প ২০২১- পাঁচ বছরের অর্জন ও আগামী পাঁচ বছরের অঙ্গীকার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি নিয়ে সৃষ্ট ধূম্রজাল নিয়ে নিজের অবস্থার পরিষ্কার করেন সাকিব। তিনি লিখেছেন, ‘I was requested by the board president to join the program on behalf of the cricket team and I haven’t said a single word about politics.’
তিনটি আলাদা টুইট লিখেছেন সাকিব। সেখানে প্রথমেই তিনি লিখেছেন, আমি বিষয়টি একটু পরিষ্কার করতে চাই…। আমি রাজনীতিতে নাম লেখাচ্ছি না। ইহজীবনে তার ন্যূনতম ইচ্ছাও নেই। (Let me clear myself….. I am not joining politics and I don’t have any intention to join politics in my life.)
কোনো কোনো গণমাধ্যমে বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করে প্রকাশ করা হয়েছে- এমন ইঙ্গিত দিয়ে সাকিব আরো লিখেছেন, তাই সবার প্রতি অনুরোধ, দয়া করে মিডিয়ার কথা বিশ্বাস করবেন না। আশা করি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পেরেছি।’(So I would request you guys please not to trust our media. I hope I clear myself). -দৈনিক ইনকিলাব

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button