বিশ্বের ৮ শতাধিক শহরে আল-কুদস দিবস পালিত
বিশ্বের ৮ শতাধিক শহরে গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক আল-কুদস দিবস পালিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে এবং ইসরাইলের কবল থেকে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ ও বায়তুল মুকাদ্দাস শহর মুক্ত করার দাবিতে কুদ্স দিবস পালিত হয়ে আসছে। ইরানে ইসলামি বিপ্লব সফল হওয়ার পর ইমাম খোমেনী পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আন্তর্জাতিক আল-কুদ্স দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কুদ্স দিবসে বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অধিকাংশ এলাকায় ১৭ মে বৃহস্পতিবার থেকে সওম পালন শুরু করায় রমজান মাস ২৯ দিনে সমাপ্ত হলে আগামী ১৫ জুন শুক্রবার হবে ঈদুল ফিতর। সেই হিসেবে গতকালই ছিল সেসব অঞ্চলে রমজানের শেষ শুক্রবার। তবে বাংলাদেশসহ যেসব দেশ ১৮ মে শুক্রবার থেকে সওম পালন শুরু করেছে তারা আগামী শুক্রবার বিশ্ব আল-কুদস দিবস পালন করবে।
আল-কুদ্স দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার ইরানের রাজধানী তেহরান এবং অন্যান্য শহরের সর্বস্তরের লোকজন মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন। একই ধরনের কর্মসূচি নেয়া হয় ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডন ও কানাডার টরেন্টোসহ বিশ্বের ৮০০ শহরে। এসব কমূসূচিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেয়া এবং ইসরাইলি পতাকা পোড়ানো হয়।
টরেন্টোয় সমাবেশ আয়োজনকারীরা আগেই জানান, ন্যায়বিচার, শান্তি ও ভালোবাসা হচ্ছে এবারের কুদ্স দিবসের মূল প্রতিপাদ্য। এর পাশাপাশি ইসলামভীতি, বর্ণবাদ ও ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধের বিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হবে।
কুদ্স দিবস উপলক্ষে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের অবৈধ সীমান্ত দেয়ালের কাছে ফিলিস্তিনিরা সমবেত হন। ওই এলাকায় সামপ্রতিক সপ্তাহগুলোতে আয়োজিত বিক্ষোভ-প্রতিবাদে ইসরাইল ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
এবারের কুদ্স দিবস এমন সময় পালিত হচ্ছে যখন মার্কিন সরকার পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শহরকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ওই শহরে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
এদিকে ইরানের রাজধানী তেহরানে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা একটি ইশতেহার প্রকাশ করেছেন। তারা ইহুদীবাদের দখল থেকে নিরস্ত্র মজলুম ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ইসরাইল নামের ক্যান্সারকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে হবে এবং এটি হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবেরও মূল লক্ষ্য।
ইশতেহারে ইসরাইলের ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরী’ প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে আরো বলা হয়, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন, সব ফিলিস্তিনির অংশগ্রহণে গণভোট আয়োজন এবং ফিলিস্তিনের সব ভূখন্ড পুরোপুরি মুক্ত করার মাধ্যমেই ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হতে পারে। এর বিকল্প কোন প্রস্তাব মানেই হলো ইহুদীবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব ও অপরাধযজ্ঞ মেনে নেয়া এবং ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকারকে পদদলিত করা।