জর্ডানকে ২৫০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি
অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অবস্থায় থাকা জর্দানকে সহায়তা করার জন্য সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কুয়েত মোট ২৫০ কোটি ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে দেশটিকে এই সহায়তায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশীরা।
সংকটের শুরুটা হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের অর্থ শোধ দিতে ব্যয় সংকোচন ও কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জর্দান। এতে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। তাই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে জর্দানের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিবেশীরা।
মধ্যপ্রাচ্যে রাজতন্ত্র আছে এমন দেশগুলো ভয় পেয়ে গিয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত জর্দানে দেখা দেওয়া গণআন্দোলন যেন আবার অন্যান্য দেশেও না ছড়িয়ে পড়ে। বাহরাইন ও মিসরে ইতোমধ্যেই এমন আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে।
মক্কাতে অনুষ্ঠিত চার দেশের এক সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সহায়তাকারীরা জর্দানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অর্থ অনুদান হিসেবে দেবে, বিশ্ব ব্যাংকের গ্যারান্টির ব্যবস্থা করবে, আগামী পাঁচ বছর বাজেট প্রণয়নে সহায়তা দেবে এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। সৌদি সংবাদসংস্থা আর্থিক সহায়তার ওই সিদ্ধান্তকে ভাতৃসুলভ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের আলোকে নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৭২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের ঋণ নেওয়ার পর জর্দান এখন ওই ঋণ পরিশোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। ঋণ পরিশোধের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা ব্যয় সংকোচন নীতি বাস্তবায়ন করা শুরু করেছিল। আর তাতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়ে সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছিল।
তাছাড়া দেশটি রাজস্ব আয় বাড়াতে কর বৃদ্ধিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এতে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে দেশটির জনগণ। উত্তেজনা প্রশমনে পদত্যাগ করেন জর্দানের প্রধানমন্ত্রী হানি মুলকি। গত ৭ জুন সরকার জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে জনগণের প্রত্যাশা ও ঋণ পরিশোধের বিষয় দুটিকে সমন্বয় করাটা তাদের জন্য এখন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। জর্দান মনে করে, তার অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারণ আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা।
জর্দানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি ২ কোটি ৩৫ লাখ ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটা জর্দানের জন্য ইউরোপের দান নয় বরং বিনিয়োগ। জর্দান বিশ্বের অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত একটি দেশ। ফেডেরিকা মোঘেরিনির ভাষ্য, আমরা তাদের প্রয়োজনটা বুঝেছি। আমরা তাদের চাপের বিষয়টিও বুঝি। সেজন্যই আমরা তাদের সহায়তা করছি।’