বিরল ঐক্যে পাঁচ মার্কিন ফার্স্ট লেডি

firstladyমেক্সিকোর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেয়া ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান নিয়েছেন পাঁচ মার্কিন ফার্স্টলেডি। মেক্সিকো সীমান্ত ট্রাম্প প্রশাসন পরিচালিত কঠোর অভিযানে বিপুল পরিমাণ পূর্ণবয়স্ক নারী-পুরুষ আটক হওয়ায় ছয় সপ্তাহেই এক হাজার ৯৯৫ জন শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ডেমোক্রেট-রিপাবলিকান নির্বিশেষে ফার্স্টলেডিদের মধ্যে পাঁচ জন এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এদের মধ্যে বর্তমান ফার্স্ট লেডি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পও রয়েছেন। এ ছাড়া সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের স্ত্রী লরা বুশ, ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা, ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের স্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, শান্তীতে নোবেল জয়ী সাবেক ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের স্ত্রী রোজালিন কার্টার এই নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে মার্কিন ফার্স্টলেডিদের এমন ঐক্যের ঘটনা মার্কিন ইতিহাসে বিরল।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করে তারই স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার নীতির বিরোধিতা করেছেন। মেলানিয়ার মুখপাত্র সিএনএনকে জানান, ‘পরিবারের কাছ থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার দৃশ্যকে মেলানিয়া ঘৃণার চোখে দেখেন। তিনি আশা করেন, কংগ্রেসে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট দুই পক্ষ শেষ পর্যন্ত অভিবাসন আইন সংস্কারের প্রশ্নে একমত হতে পারবে।’
মেলানিয়ার এই অবস্থানের সঙ্গে সহমত জানিয়েছেন আরেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের স্ত্রী ও সাবেক ফার্স্টলেডি লরা বুশ। ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করে তিনি এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘এই জিরো টলারেন্স নীতি নিষ্ঠুর। এটা অনৈতিক। এতে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘নৈতিকতার দিক দিয়ে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা দুর্ভিক্ষ, অথবা যুদ্ধে বিধ্বস্ত জায়গাগুলোতে মানবিক সহায়তা পাঠিয়ে মার্কিনিরা গৌরব অর্জন করেছে। আমরা এমন একটি গৌরবান্বিত জাতি যারা বিশ্বাস করে, গায়ের রঙ নয়, মানুষের আচরণ দিয়ে তাকে বিবেচনা করতে হবে। গ্রহণযোগ্যতার দিক দিয়ে আমরা গৌরব অর্জন করেছি। আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই সেই দেশ হই, তবে এসব বন্দি শিশুকে তাদের মা-বাবার সঙ্গে পুনঃএকত্রিত করানো এবং মা-বাবা থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার এ পদক্ষেপ বন্ধ করা আমাদের দায়িত্ব।’
লরা বুশ টুইটারে নিজের লেখাটি শেয়ার করেন। মিশেল ওবামা সেই টুইটার পোস্টটি রি-টুইট করে লিখেছেন, ‘কখনো কখনো সত্য দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিকে অতিক্রম করে যায়’। তার স্বামী বারাক ওবামাও পোস্টটি রিটুইট করেন। বিল ক্লিনটনের স্ত্রী, সাবেক ফার্স্টলেডি হিলারি ক্লিনটন একাধিক টুইটে ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেন। একটি টুইটে তিনি লিখেছেন, অভিবাসীদের নিয়েই যে জাতি, সেই যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় নীতি এখন শিশুদের অভিভাবকদের থেকে বিচ্ছিন্ন করা। এটা অবশ্যই একটা ক্ষরণ। অপর এক টুইটে তিনি লেখেন, সবচেয়ে বিপন্নদের, বিশেষ করে শিশুদের ব্যাপারে আমরা কী পদক্ষেপ নিচ্ছি, সেটাই যুক্তরাষ্ট্রে এখন সবচেয়ে বেশি মনোযোগের দাবিদার। আমাদের চোখের সামনে যা ঘটছে, তা দেখে আমরা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। আমাদের এর বিরুদ্ধে শক্তভাবে দাঁড়ানো দরকার।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের স্ত্রী ফার্স্ট লেডি রোজালিন কার্টার সোমবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের নীতিকে ‘লজ্জাকর ও নিন্দাজনক’ আখ্যা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button