হজ্ব যাত্রায় ভারতের রেকর্ড
ভারতে হজ্ব যাত্রায় সমস্ত ভর্তুকি প্রত্যাহার করার পরও দেশটির ইতিহাসে এবছর সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ হজে যাচ্ছেন। এবার ভারতের হজ্বযাত্রীর মোট সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৫ জন। যা দেশটির স্বাধীনতার পর থেকে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।
রেকর্ডের এখানেই শেষ নয়। আরও বড় রেকর্ড হলো- মোট হজ্বযাত্রীর ৪৭ শতাংশ নারী। অথাৎ এবার হজ্ব যাত্রায় রেকর্ড করছেন ভারতীয় মুসলিম নারীরাও। এছাড়া এই প্রথমবার ভারতীয় মুসলমান নারীরা ‘মেহরাম’ বা পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই হজ্ব যাত্রায় অংশ নিতে পারছেন। এবছর ১৩০৮ জন নারী ‘মেহরাম’ ছাড়াই হজে যাচ্ছেন। এটিও একটি রেকর্ড।
ভাতরের কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানিয়েছেন, হজের জন্য এবছর মোট ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬০৪টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে পুরুষ আবেদনকারী ছিলেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ২১৭ জন। আর নারী আবেদনকারী ছিলেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৭ জন। হজ্ব কমিটির থেকে হজ্ব যাত্রার অনুমোদন পেয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৫ জন। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম এত বেশি সংখ্যায় মানুষ হজ্ব করতে যাচ্ছেন বলে দাবি নকভির।
তিনি আরও জানান, এই প্রথমবার হজ্বযাত্রীদের ভর্তুকি দিচ্ছে না সরকার। অন্যদিকে, সৌদি আরব নানা রকম কর চাপিয়েছে। তা সত্বেও এত বেশি মানুষ এবার হজে যাচ্ছেন।
আগামী ১৭ জুলাই কলকাতার হজ্বযাত্রীরা সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবেন। ২০ জুলাই বারাণসী, ২১ জুলাই ব্যাঙ্গালোর, ২৬ জুলাই গোয়া ও ২৯ জুলাই অউরাঙ্গাবাদ, চেন্নাই, মুম্বই ও নাগপুরের হজ্বয়াত্রীরা রওনা দেবেন। ৩০ জুলাই রাচি, ১ অগাস্ট আহমেদাবাদ, ৩ অগাস্ট ভোপালের হজ্বযাত্রীরা রওনা দেবেন। তবে সব বিমান ছাড়বে দিল্লী থেকে।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে মোদি সরকার হজ্বযাত্রীর ওপর থেকে সমস্ত ভর্তুকি তুলে নেয়। প্রতিবছর হজ্ব যাত্রা বাবদ ৭০০ কোটি রুপি ভর্তুকি দিত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। হজ্বযাত্রীদের সুবিধার্থে এই ভর্তুকি চালু ছিল। কিন্ত ২০১২ সাল থেকে ভারতের কেন্দ্রে দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমল থেকেই দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে হজ্ব যাত্রায় ভর্তুকি তুলতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের সেই রায়ের পর এক বিশেষ কমিটির মাধ্যমে প্রতিবছর ধাপে ধাপে কমানো হতে থাকে হজ্ব যাত্রায় ভর্তুকির পরিমাণ। ২০১৩ সালে হজ্ব যাত্রার খাতে বরাদ্দ করা হয় ৬৮০ কোটি রুপি, ২০১৪ সালে বরাদ্দ হয় ৫৭৭ কোটি রুপি, ২০১৫ সালে বরাদ্দ হয় ৫২৯ কোটি রুপি এবং ২০১৬ সালে বরাদ্দ হয় ৪০৫ কোটি রুপি। এই বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র্র মোদির সরকার হজ্বযাত্রায় ভর্তুকির পরিমাণ পাকাপাকিভাবে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।