বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগ করতে চায় ব্রিটেন
বাংলাদেশকে মধ্যম-আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে সাহায্য করার জন্য যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে চায় বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্যদূত এমপি রুশনারা আলী। তার মতে, ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের সাথে তাদের দৃঢ় বন্ধনকে কাজে লাগিয়ে এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামো খাত স্পষ্টতই বড় ক্ষেত্র। এছাড়া জ্বালানি খাত, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, শিক্ষা ও দক্ষতা বিনিময়ের মতো কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন তিনি।
দুদেশের একসাথে অনেক কিছু করার আছে উল্লেখ করে রুশনারা বলেন, ‘আপনাদের ক্রমবর্ধমানভাবে শিক্ষিত তরুণ এক প্রজন্ম রয়েছে। আপনারা নতুন উদ্যোগ উন্নয়নে আসলেই জড়িয়ে যাচ্ছেন।’
গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে রুশনারার এ সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেকও উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটিশ বাণিজ্যদূত বলেন, রেল, সড়ক, সেতু ও বিমানবন্দরের মতো মৌলিক বিষয়গুলোতে বিনিয়োগ প্রয়োজন এবং এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন দেশের অংশীদারিত্ব দরকার, যা বাংলাদেশের মধ্যম-আয়ের দেশ হয়ে উঠার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে সাহায্য করবে।
এসব অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি রুশনারা আলী বাংলাদেশে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের’ ওপরও জোর দেন।
বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা দিয়ে তিনি বলেন, ব্যবসার পরিবেশ অধিকতর উন্নয়ন করার মানে হলো ভবিষ্যত বিনিয়োগের জন্য শুধু যুক্তরাজ্য নয়, অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে অবস্থান করা এই ব্রিটিশ বাণিজ্যদূত বলেন, ‘যেসব দেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনার সহায়ক পরিবেশ আছে সেখানে ব্যবসা যাচ্ছে। আপনারা এটা ভালো করেই জানেন।’
রুশনারা বলেন, ব্যবসার প্রতিবন্ধকতাগুলো ভালোভাবেই বোঝা যায়। তিনি মনে করেন, এসব বিষয় তার ব্যাখ্যার চেয়েও ভালোভাবে বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারে।
তবে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে এ বিষয়ে তারা একসাথে কাজ করছেন এবং ব্যবসার সহায়ক একটি পরিবেশ বেরিয়ে আসবে।
ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের সম্পর্কে তিনি বলেন, এই দেশের সাথে সম্পর্ক থাকার কারণে তাদের খুব উচ্চ প্রত্যাশা রয়েছে। ‘তাদের উৎস এখানে। এ দেশের প্রতি তাদের বিপুল প্রতিশ্রুতি আছে।’
রুশনারা বলেন, মানুষ যদি প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েন তা হলে মাঝেমধ্যে হতাশ হয়ে ফিরে যান। ‘এই সম্পর্ককে সুরক্ষা, দৃঢ়তা দেয়া ও লালন করা প্রয়োজন। আমাদের এখানে ভূমিকা পালন করার আছে।’
তিনি বিপুল পরিমাণে পোশাক ও প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনের ওপর জোর দেন। তার মতে, এসব ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের সত্যিকারের সম্ভাবনা রয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা বলেন, এটা একটি ‘ভয়ানক দুঃখজনক ঘটনা’ এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবিক সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন।
সহায়তা বাড়ানো ব্রিটেনের প্রথম অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাপ দিয়ে যাব। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যাতে এই গুরুতর সংকট থেকে চোখ ফিরিয়ে না নেয় তা আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’