যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন এরদোগান
তুরস্কের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। তিনি বলেছেন, তুরস্কে আমেরিকার আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্পদ জব্দ করা হবে। শনিবার আঙ্কারায় নিজ দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির এক নারী সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
এরদোগান বলেন, আমি আজ আমার বন্ধুদের নির্দেশনা দিচ্ছি। মার্কিন আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর যদি এখানে তাদের কোনও সম্পদ থাকে, তাহলে তা জব্দ করা হবে।
তুর্কি মন্ত্রীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কোনও যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেন এরদোয়ান বলেন, কৌশলগত মিত্রের বিরুদ্ধে তারা যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা সঠিক নয়। নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে আমেরিকার হটকারী এবং তাদের বোকামিপূর্ণ সিদ্ধান্তে তুর্কি জাতি পিছু হটবে না।
এর আগে গত ১ আগস্ট বুধবার তুরস্কের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোইলু এবং আইনমন্ত্রী আবদুলহামিত গুল-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকান ধর্মযাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত কোনও দেশে যুক্তরাষ্ট্রের এমন নিষেধাজ্ঞা এটাই প্রথম। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তুরস্কের উল্লিখিত দুই মন্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে। আমেরিকায় তাদের কোনও সম্পদ গচ্ছিত থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুই বছর ধরে তুরস্কে আটক অবস্থায় রয়েছেন খ্রিস্টান ধর্মযাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসন। তার বিরুদ্ধে আনা সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, আমেরিকান খ্রিস্টান ধর্মজাযক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে ২০১৬ সাল থেকে আটকে রাখার পেছনে এই দুই মন্ত্রী মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটন।
ইস্তানবুলের অভিযোগ, ওই মার্কিন যাজক তুরস্কের বিচ্ছ্ন্নিতাবাদী কুর্দি বিদ্রোহীদের সমর্থন করেন।
এখন বিক্ষুব্ধ তুর্কিদের দাবি অনুযায়ী যদি তুরস্কে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে দুই ন্যাটো মিত্রের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা চরম হুমকির মুখে পড়বে। ১৯৭৪ সালে তুরস্ক উত্তর সাইপ্রাসে অভিযান চালানোর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে এতটা অবনতি আর ঘটেনি।