মিত্রদের ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
আমেরিকার সাথে ব্যবসা করতে হলে ইরানকে ছাড়তে হবে
ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে বারাক ওবামার শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র সহ ছয়টি শক্তিধর দেশের সাথে তেহরানের যে চুক্তি হয়েছিল, তা থেকে মে মাসে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
চীন, রাশিয়া, এমনকী ইউরোপীয় মিত্রদের কারো কথায় কান দেননি তিনি।
এরপর আজ মঙ্গলবার থেকে ইরানের ওপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি গত বেশ কিছুদিন ধরে বলছে এই নিষেধাজ্ঞা তারা মানতে পারবে না, কারণ তা চুক্তি ভঙ্গের সামিল হবে।
কিন্তু ঘনিষ্ঠ পশ্চিমা মিত্রদের ছাড় দেবার কোনোরকম ইঙ্গিতই দেখাননি মি. ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যে দেশই ইরানের সাথে ব্যবসা করবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ব্যবসা করতে পারবে না।
কি বলছে ইউরোপ?
ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করেছে।
সোমবার এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যৌথ এক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইরানের সাথে চুক্তি অব্যাহত রাখা বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য জরুরী এবং চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।
ইরানের সাথে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে বিশেষ আইনি সুরক্ষার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ব্রিটেনের একজন মন্ত্রী অ্যলেস্টার বার্ট বিবিসিকে বলেছেন, যদি কোনো ইউরোপীয় কোম্পানি ইরানের সাথে ব্যবসার জন্য মামলার মুখে পড়ে, তাকে ইউরোপীয় আইনে সুরক্ষা দেওয়া হবে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই প্রতিশ্রুতিতে অনেক ইউরোপীয় কোম্পানিই হয়তো ভরসা পাবেনা, অন্তত যারা আমেরিকায় ব্যবসা করে।
জার্মান ট্রাক এবং মোটরসাইকেল নির্মাতা ডেইমলার ইরানের সাথে যৌথ-বিনিয়োগ একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।
ইরানের প্রতিক্রিয়া
ইরানের সরকার মুখে বলছে এই নিষেধাজ্ঞায় তাদের কিছু যায় আসবে না।
ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার আলি লারিজানি বলেছেন, এসব নিষেধাজ্ঞা বরং ইরানকে আরো শক্তিশালী করবে এবং তার দেশে আরো স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।
কিন্তু বিবিসির বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, ইরান এতে সাময়িকভাবে লাভবান হলেও তাদের অর্থনীতি সার্বিকভাবে এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে তারা ২০১৩ সালে পশ্চিমাদের সাথে মীমাংসা আলোচনায় আবার ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিল।
এছাড়া, অর্থনৈতিক দুর্দশার ফলে ইরানে গণ-অসন্তোষও বাড়ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ইরানি বলছেন, তাদের নেতারা বাস্তব অবস্থা স্বীকার করতে চাইছেন না, তারা সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে আমেরিকার সাথে লড়াই করতে চান। -বিবিসি