বিশ্বব্যাপী ‘নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধ’ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরান নতুন কৌশলে
বিশ্বব্যাপী ‘নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধ’ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া, ইরান, তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর এবার নতুন করে এর আওতায় এসেছে চীন।
উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগে এবার রাশিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরের তিনটি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পিয়ংইয়ংয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে তার অংশ হিসেবে বুধবার মার্কিন সরকার এ ঘোষণা দিয়েছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন নুচিন এক বিবৃতিতে বলেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে এবং এ নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর কৌশল হিসেবে রাশিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক যেসব কোম্পানি কাজ করছে তাদের মার্কিন আইনের আওতায় আনা হবে। এসব কোম্পানি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় একজন ব্যবসায়ীকে এবং চীন, রাশিয়া ও সিঙ্গাপুরের তিনটি জাহাজ কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এগুলো হলো চীনের ডালিয়ান সান মুন স্টার ইন্টারন্যাশনাল লজিস্টিক ট্রেডিং কোম্পানি এবং সিঙ্গাপুরভিত্তিক এসআইএসএমএস লিমিটেড।
দুই কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়ার বন্দর সেবা সংস্থা প্রফিনেট লিমিটেডিএবং এর পরিচালক ভ্যাসিলি আলেকজান্দ্রোভিচকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
বিপাকে আমেরিকা; রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরানের নতুন কৌশল
রাশিয়া, তুরস্ক ও ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার অবৈধ নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বের দেশগুলোর কাছে ডলারের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। এ মন্তব্য করেছেন রাশিয়া ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
মঙ্গলবার আঙ্কারায় তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লুর সাথে সাক্ষাতের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, কয়েক বছর আগে থেকেই আমরা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজস্ব মুদ্রা ব্যবহারের কথা ভাবছি। ইরান ও তুরস্কের সাথে এরইমধ্যে এ ব্যাপারে সমঝোতা হয়েছে এবং চীনের সাথে সমঝোতার কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছি।
ল্যাভরভ আরো বলেন, অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ অবৈধ; এমনকি মার্কিন আইনের সাথেই সাংঘর্ষিক। অচিরেই আন্তর্জাতিক লেনদেনে ডলারের প্রভাব কমতে শুরু করবে এবং বিশ্বের বহু দেশ ডলারের ব্যবহার বন্ধ করে দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের নীতির বিরোধী। ইউরোপীয় দেশগুলিও এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। ইরান বিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় অংশ নেবে না তুরস্ক। আমরা আমেরিকাকে জানিয়ে দিয়েছি, আগের মতোই ইরানের কাছ থেকে গ্যাস কেনা অব্যাহত রাখব।