তুরস্ককে নৈতিক সমর্থন জানালো চীন
৩৮০ কোটি ডলারের চুক্তি
মার্কিন এক যাজককে গ্রেপ্তার করা নিয়ে ওয়াশিংটন ও আঙ্কারার মধ্যে যখন টানাপড়েন চলছে তখন তুরস্কের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে চীন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা আশা করে তুরস্ক তাদের এ ‘সাময়িক’ অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে। দু’ই বছর আগে তুরস্কে যে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান হয় তাতে অ্যান্ড্রিউ ব্রুনসন নামের ওই মার্কিন যাজকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে তুরস্ক। এখন দেশটির আইন অনুযায়ী তার বিচার চলছে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে মুক্তি দিতে তুরস্কের ওপর চাপ দিয়ে আসছেন। কিন্তু আঙ্কারা বলছে, আইন সবার জন্য সমান। তুরস্কের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। কিন্তু তুরস্কের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প এবং কয়েকদিন আগে তুরস্কের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেন। এ অবস্থায় মার্কিন ডলারের তুলনায় তুর্কি মুদ্রা লিরার মূল্য কমে গেছে। যদিও আঙ্কারা মার্কিন যাত্রীবাহী বিমান, অ্যালকোহল ও তামাকজাতীয় পণ্য আমদানির ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেছে। এই অবস্থায় সামরিক জোট ন্যাটোর এই দুই সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ব্যাপক টানাপড়েন শুরু হয়েছে। বার্তা সংস্থা বলছে, শুক্রবার এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো মন্তব্য করলো বেইজিং।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই পদক্ষেপের পর নিজেদের অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখতে নতুন কিছু নীতি নির্ধারণ করেছে আঙ্কারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তুর্কি অর্থনীতির ‘নতুন নীতি’ এবং বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়টি তাদের নজরে আছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বর্ধনশীল বাজার এবং এটি নিজে যেমন স্থিতিশীল রয়েছে তেমনি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে ভূমিকা রেখে লাভবান হচ্ছে।’ তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চীন বিশ্বাস করে, সাময়িক অর্থনৈতিক অসুবিধা কাটিয়ে উঠার সক্ষমতা তুরস্কের আছে। সেইসঙ্গে এটাও আশা করে যে, সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে তাদের মধ্যকার মতপার্থক্যগুলো মিটিয়ে ফেলবে।’এ ছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক চায়না তুরস্কের সঙ্গে ৩৮০ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক চুক্তি করেছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। গত মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া ওই অর্থনৈতিক চুক্তির কথা জানায়। কিন্তু এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শুক্রবারের ওই বিবৃতিতে বল হয়েছে, বেইজিং বিভিন্ন দেশের মধ্যকার ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি সব সময় সমর্থন করেছে এবং বাজার নীতি অনুযায়ী বিভিন্ন চুক্তি করছে।উল্লেখ্য, উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনের দমন-পীড়নের কারণে দেশটির সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের অবনতি হলেও সম্প্রতি সম্পর্কোন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে বেইজিং ও আঙ্কারা। চীনের দূর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের ওই উইঘুর মুসলিমরা তুর্কি ভাষাভাষী।