ব্রিটেনে নিকাব নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে
ব্রিটেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মুসলিম মেয়েদের নিকাব পরিধান নিষিদ্ধে জাতীয় বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির হোম অফিস মিনিস্টার জেরিমি ব্রাউন। ক্ষমতাসীন কোয়লিশন সরকারের অন্যতম অংশীদার লিবারেল ডেমোক্রেট দলের এ নেতা বলেন, ব্যক্তি স্বাধীনতা বা ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হবে এমন কিছু করতে তিনি রাজি নন। তবে অ্যালকোহল, সিগারেট কিংবা বিবাহ বন্ধনের মত বিষয়গুলোতে যেমন একটি নির্দিষ্ট বয়সের বিধিনিষেধ রয়েছে তেমনি নিকাব পরিধানের ক্ষেত্রেও এ রকম কিছু থাকা উচিত। তার মতে, একটি নির্দিষ্ট বয়স পর মেয়েরাই সিদ্ধান্ত নেবে তারা নিকাব পরবে কী পরবে না। সম্প্রতি ডেইলি টেলিগ্রাফের সাথে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে ব্রাউন এসব কথা বলেন। রবিবার তিনি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে দলের বার্ষিক সভায়ও বিষয়টি উত্থাপন করেন। ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায় বিষয়টিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ব্রাউন আরো বলেন, ধর্ম পালনের স্বধীনতা এবং সংখ্যালঘু মানুষের স্বাধীকার রক্ষায় ব্রিটেনের সুনাম রয়েছে। কিন্তু মানুষের ব্যক্তিস্বধীনতা রক্ষায়ও রাষ্ট্রের করণীয় রয়েছে। অবুঝ শিশু-কিশোরদের ওপর পরিবার কোন ধরনের বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দিতে পারবে সে বিষয়ে রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকা উচিত বলে তিনি মত দেন। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভুমিকা গণবিতর্কের মাধ্যমে নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন।
গত সপ্তাহে ব্রিটেনের বার্মিংহাম মেট্রোপলিটন কলেজ শিক্ষার্থীদের নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ করে এক নির্দেশ জারি করে। ঐ নির্দেশে তারা মাথায় টুপি, হুডি কিংবা মুখমণ্ডল আড়াল করে এমন পোশাক পরিধানও নিষিদ্ধ করে। নিরাপত্তার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত মুসলিম মূল্যবোধের জন্য হুমকি – এ অভিযোগ উঠলে তারা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। আবার মুসলিমদের চাপের মুখে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘটনা বিভিন্ন মহলে সমালোচনার জন্ম দেয়।
ব্রিটিশ উপ-প্রধানমন্ত্রী লিবারেল ডেমোক্রেট নেতা নিক ক্লেগ বিবিসিকে বলেন, মানুষ কেমন পোশাক পরবে তা রাষ্ট্র কর্তৃক চাপিয়ে দেয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন না। তবে ক্লাসরুমে নিকাব পরিধান সঠিক কাজ নয় বলে তিনি মনে করেন। প্রধানমন্ত্রীর একজন মুখপাত্র বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের নিজস্ব পোশাক কোড তৈরি করা।