ইইউ’র ঐকমত্য ঠেকাতে তৎপর নেতানিয়াহু
ফিলিস্তিন ইস্যু
লিথুনিয়া সফররত ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ফিলিস্তিন ও ইসরাইল প্রসঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর মনোভাব পরিবর্তনের বিষয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। ব্রাসেলস ইসরাইলের সঙ্গে ‘ন্যায়সঙ্গত’ আচরণ করে না অভিযোগ করে নেতানিয়াহু বলেছেন, লিথুনিয়া সত্য ও ইসরাইলের পক্ষে দাঁড়াবার কাজটি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ফিলিস্তিন ও ইরান প্রসঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর মতামত পরিবর্তন করতে নেতানিয়াহু ডানপন্থী নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাছাড়া সমর্থন আদায়েপূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলোকেসামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছেইসরাইল। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করার পর থেকে পূর্ব ইউরোপের ওই দেশগুলো রাশিয়ার হামলার বিষয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
লিথুনিয়া সফররত নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছেন। ওই দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকলেও, ফিলিস্তিন ও ইসরাইল প্রশ্নে তিনি তাদের মতামত পরিবর্তন করাতে চান। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের বরাতে মিডিল ইস্ট মনিটর লিখেছে, লিথুনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেতানিয়াহুর সৌহান্দ্যপূর্ণ কথোপকথন হয়েছে। নেতানিয়াহু লিথুনিয়ার প্রধানমন্ত্রী সৌলিয়াস স্কেভেরনালিসকে বলেছেন, ‘ইসরাইলের পক্ষে আপনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিটিগুলোতে যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন তার জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অনেকগুলো ঘটনাতেই এমন হয়েছে যে ইসরাইলের সঙ্গে ন্যায় করা হয়নি ব্রাসেলসে। ইসরাইলের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। আপনি যে সত্য ও ইসরাইলের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন তা স্বস্তিদায়ক।’ গত ডিসেম্বরে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি দাওয়াতে নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল লিথুনিয়া। এ নিয়ে ইইউয়ের নেতাদের মধ্যে প্রচন্ড সমালোচনা শুরু হয়। কারণ ইউরোপীয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত এমন অনুষ্ঠানে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দেওয়াটা ইইউয়ের প্রটোকলের বিরোধী। এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রধান ফেডরিকা মোঘেরিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
শুক্রবার হারেৎজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ইইউভিত্তিক ২৮টি দেশ ফিলিস্তিনের বিষয়ে যৌথ কোনও সিদ্ধান্ত নিতে না পারে তা নিশ্চিতে কাজ করছেন নেতানিয়াহু। তার লক্ষ্য, ইইউয়ের মধ্যে ফিলিস্তিন বিষয়ে ঐক্যমত্য হতে না দেওয়া। তার কৌশল হচ্ছে, ইউরোপে ডানপন্থী দলের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেসব দেশে সেসব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করা। যেমন, হাঙ্গেরির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর ওরবানের সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছেন। ইইউ কমিটিগুলোতে ওরবানের ভোটধিকারের সুফল পাচ্ছে ইসরাইল। অন্তত দেশগুলোর মধ্যে ফিলিস্তিনের পক্ষে ঐক্যমত্য সৃষ্টি হওয়াটা বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। ফলে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত করতে পারছে ইসরাইল।