ইরান-ইসরায়েলের ভালোবাসার সেতু গড়ল যে ছবি

Iran২০১২ সালের মার্চ মাস। অবস্থা এমন যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। যেকোনো মুহূর্তেই ইরানের ওপর মিসাইল হামলা চালিয়ে বসতে পারে ইসরায়েল। ঠিক এমন সময়ে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করার কারণে এই দুই দেশের মানুষের মধ্যে গড়ে উঠেছিল ভালোবাসার সেতুবন্ধ।
ফেসবুক ব্যবহার করে চিরশত্রু ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কের সূচনা করেন রনি এডরি নামের ইসরায়েলের এক গ্রাফিকস ডিজাইনার।
রনি এডরির কোলে তাঁর ছোট মেয়ে আর ইসরায়েলের একটি পতাকা হাতে একটি সাধারণ ছবি। ছবিতে গ্রাফিকসের কাজ করে তাতে একটি বার্তা দিলেন রনি। বার্তাটি ছিল শান্তির আর ইরানের প্রতি ভালোবাসার। এরপর ফেসবুকে এ ছবিটি পোস্ট করেন তিনি।
রনির এই একটি ছবি সাড়া ফেলে ফেসবুকে। তাঁর পোস্ট করা পোস্টারসদৃশ ছবিটির দেখাদেখি ইসরায়েলের অনেকেই একই রকম পোস্টার তৈরি করেন এবং ইরানের ওপর হামলার প্রতিবাদ করতে থাকেন। অনেকে পোস্টারে দেশ দুটির মধ্যে শান্তির কথা বলেন। রনি এডরির সেই একটি ছবির কল্যাণে ফেসবুকে গড়ে ওঠে ‘ইসরায়েল লাভস ইরান’, ‘ইরান লাভস ইসরায়েল’ এমনকি ‘প্যালেস্টাইন লাভস ইসরায়েল’-এর মতো বেশ কয়েকটি ফেসবুক কমিউনিটি।
যুযুধান এ দুটি দেশের সম্পর্কের এমন পর্যায়ে একটি সামান্য শান্তির বার্তা দুই দেশের মানুষই সমানভাবে লুফে নিয়েছিল। দেশ দুটির সাধারণ জনগণের মধ্যেও ফেসবুকের মতো প্লাটফর্মে শান্তির বার্তা আদান-প্রদান সম্প্রীতির একটি প্লাটফর্ম তৈরিতে সাহায্য করেছিল।
রনি এডরি ফ্রান্সে বড় হয়েছেন। তবে ১৯৮৯ সাল থেকে তিনি ইসরায়েলে বসবাস করেছেন। তিনি পেশায় একজন গ্রাফিকস ডিজাইনের শিক্ষক। স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়েই সংসার তাঁর।
রনির তৈরি ‘ইসরায়েল লাভস ইরান’ পেজটিতে এক লাখেরও বেশি মানুষ লাইক দিয়েছেন। এ পেজটিতে ইরান, ইসরায়েলসহ নানা দেশের মানুষের তৈরি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পোস্টার পোস্ট করা হয় এখন।
এডরির এই উদ্যোগ ২০১২ সাল থেকে প্রশংসা পেয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর হাফিংটন পোস্টকে এডরি বলেছিলেন, ‘আমি পুরো দেশের প্রতিনিধিত্ব করছি না সত্যি, তবে একজন শিক্ষক ও এক সন্তানের বাবা হিসেবে আমি আমার আশপাশের সবাইকে শান্তির কথা বলি। সবার কাছে বলি, আমরা সত্যিই ইরানকে ভালোবাসি।’
ভালোবাসার আর শান্তির এ গল্প সবার কাছে পৌঁছে যাক আর আমরা সবাই যেন যুদ্ধকে ঘৃণা করে অখণ্ড ভালোবাসার এক পৃথিবী গড়তে পারি—এটাই রনি এডরির চাওয়া।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button