মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম করতে অনেক ধরনের শারীরিক রোগ যেমন- হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, বহুমূত্র, হাড়ের বিভিন্ন প্রকার রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়- এ কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আপনি জানেন কি নিয়মিত ব্যায়াম করা আপনার মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করে?

বিষণ্ণতা চিকিৎসার জন্য বিষণ্ণতাবিরোধী ওষুধ ও সাইকো থেরাপি ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক দিন ধরে। সম্প্রতি বিষণ্ণতা ও শারীরিক ব্যায়ামের মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে ৮০টি গবেষণার ফলাফল একত্র করে দেখা গেছে যে, প্রচলিত ওষুধ ও শারীরিক ব্যায়ামের মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে ৮০টি গবেষণার ফলাফল একত্র করে দেখা গেছে যে, প্রচলিত ওষুধ ও সাটকো থেরাপির পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়াম ও বিষণ্ণতা চিকিৎসায় কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে:
স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি উভয় ক্ষেত্রে বিষণ্ণতা উপসর্গ বিলোপের ক্ষেত্রে শারীরিক ব্যায়াম একটি কার্যকর পদ্ধতি।

গবেষণার অন্তর্ভুক্ত সবার ক্ষেত্রে বিষন্নতা বিলোপের জন্য শারীরিক ব্যায়াম কার্যকর হতে এবং ব্যায়াম শুরুর আগে যাদের শারীরিক অসুস্থতা ছিল তারা শারীরিক ব্যায়ামের ক্ষেত্রে বেশি উপকৃত হয়েছে।

সব বয়সের ব্যক্তির জন্য শারীরিক ব্যায়াম উপকারী হলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে উপকারিতা বাড়তে দেখা গেছে। অর্থাৎ বিষণ্ণতা বিলোপের ক্ষেত্রে যাদের বয়স বেশি তারা শারীরিক ব্যায়াম থেকে বেশি উপকার পান।
নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই শারীরিক ব্যায়াম সমান উপকারী।

হাঁটা বা জগিং করা বা অন্য যেকোনো ধরনের অ্যারোবিক বা অ্যানোরোবিক ব্যায়াম বিষণ্ণতার উপসর্গ প্রশমনে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ব্যায়াম করার দিনের পরিমাণ যত বাড়তে থাকে বিষণ্ণতার উপসর্গ তত কমতে থাকে।

বিষণ্ণতা বিলোপে শারীরিক ব্যায়ামের কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ার পর অন্যান্য মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে শারীরিক ব্যায়ামের উপযোগিতা নিয়ে অনেক গবেষণা করা হয়েছে। এসব গবেষণা থেকে দেখা যায়, দুশ্চিন্তাগ্রস্ততা, আত্মবিশ্বাসের অভাব, মাদকাসক্তি চিকিৎসা এবং অন্যান্য মানসিক রোগে আক্রান্তদের বুদ্ধি ও মনন বজায় রাখার ক্ষেত্রে শারীরিক ব্যায়াম কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

আপনি যদি বিষণ্ণতা বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ততায় ভুগে থাকেন এবং শারীরিক ব্যায়াম করার কথা ভেবে থাকেন তবে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় উপদেশ হচ্ছে :

আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে ব্যায়াম শুরুর ব্যাপারে আপনার স্বাস্থ্যের সামর্থ্য নির্ণয় করুন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম শুরু করুন।

কোন নির্দিষ্ট ব্যায়াম আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী হবে তা আগেভাগে বলা যায় না। তাই হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা বা যোগব্যায়াম যেটাই আপনি পছন্দ করেন সেটা থেকে শুরু করুন। একের পর এক পরখ করে দেখুন।
মাঠে বা ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করতে গেলে অনেক লোকের সাথে আপনার পরিচয় ঘটবে। এতে আপনার সামাজিক আচরণ বিকশিত হবে। বিষণ্ণতায় মানুষের সামাজিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যায়াম করতে গিয়ে সেসব সামাজিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত হতে পারে।

ব্যায়ামের ফলে আপনার মনের যতটুকু উন্নতি হয় ততটুকুকে অবলম্বন করে আশাবাদী হয়ে উঠুন। বিষণ্ণতা আপনাকে ছাড়বেই।

-ডা: জিল্লুর কামাল

মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ, চেম্বার : সুখী মন, ১৭/৮ পরীবাগ, ঢাকা।
ফোন : ০১৭১১৮১৯৫৩৭

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button