ভারতীয় মুসলিম নেতার প্রশ্ন
পরকীয়া বৈধ, তিন তালাক অপরাধ হলো কেন?
পরকীয়া অপরাধ না হলে তিন তালাক হয় কীভাবে? প্রশ্ন তুললেন অল ইন্ডিয়া মজলিস–ই– ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। বলেন, মুসলিম মহিলাদের অধিকার নিয়ে অর্ডিন্যান্স ন্যায়বিচার নয়। সরকার মুসলিম–বিরোধী, এই অর্ডিন্যান্সেই তা স্পষ্ট। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনেল ল বোর্ড (এআইএমপিএলবি) বলছে, তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ করে গণতন্ত্রকে খুন করা হয়েছে। এটা সংসদের অপমান।
এআইএমপিএলবি–র সেক্রেটারি মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ রেহমানির কথায়, জনমতের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আইন করা যেত। কিন্তু সরকার অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে পেছন দরজা দিয়ে অর্ডিন্যান্স করেছে। মুসলিমদের পক্ষে এটা মানা অসম্ভব। মুসলিম মহিলারা ইতিমধ্যে একে খারিজ করেছে। সরকার সংসদে এই মর্মে বিল আনার চেষ্টা করছে। ওই সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিলের খসড়া তৈরি হলো। এই বিল মহিলাদের অধিকার বিরোধী। তিন তালাককে অপরাধ করলে স্বামী–পরিত্যক্তা মহিলার সংখ্যা আরো বাড়বে। এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে, সেই ইঙ্গিত রয়েছে তার কথায়।
ওয়াইসি টুইটে বলেন, সংবিধানের ৩৭৭ এবং ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক বলা হলো। সমকাম, পরকীয়া আর অপরাধ রইল না। অথচ তিন তালাকের ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবেই দেখানো হয়েছে। এটা কী ধরনের ন্যায় বিচার? এবার বিজেপি কী করবে?
তার কথায়, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বিজেপি–র বিরুদ্ধে। রাফায়েল, মেহুল চোকসি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি থেকে চোখ সরাতে তিন তালাকের অর্ডিন্যান্স করেছে কেন্দ্র সরকার। অর্ডিন্যান্সের প্রথম পাতায় রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট একে অসাংবিধানিক বলেছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এমন মন্তব্য করেনি। অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ। এতে মুসলিমরাই সমস্যায় পড়বেন। এই অর্ডিন্যান্সকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানো উচিত।’
তিনি জানতে চান, তিন তালাকের জেরে স্বামীর জেল হলে তিনি স্ত্রীর খোরপোশ জোগাবেন কীভাবে? তিন তালাক সংক্রান্ত মোদি সরকারের অর্ডিন্যান্সের উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাককে অসাংবিধানিক বলেনি। পাশ কাটিয়ে গেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত ৩৭৭ ধারা এবং ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক বলেছে। তিন তালাক সংক্রান্ত মোদি সরকারের আনা অর্ডিন্যান্স অসাংবিধানিক। এই রায় থেকে শিক্ষা নিয়ে কি মোদি সরকার তাদের তিন তালাক সংক্রান্ত অসাংবিধানিক অর্ডিন্যান্স ফিরিয়ে নেবে?’ আরো বলেন, ইসলামে বিয়ে সামাজিক চুক্তি। তাকে শাস্তির আওতায় আনা ভুল এবং অপ্রয়োজনীয়। ২০১১ সালের জনগণনায় ২৪ লাখ গরিব মহিলার উল্লেখ রয়েছে। তাদের স্বামীরা তাদের দেখেন না।