যে কারণে আশরাফের পদত্যাগের গুজব
আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ আর চায় না দলের সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম থাকুন।বিশেষ করে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয়ের পর, এই তৎপরতা আরো জোরালো হয়েছে । যে কারণে তার পদ ছাড়ার কথা ছড়ানো হচ্ছে।
তবে এটাও ঠিক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ব্যর্থতার দায় নিয়ে দলের পদ ছাড়তে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছিলেন ঘনিষ্ঠদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে এলে সৈয়দ আশরাফ তার সঙ্গে দেখা করে সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়ার প্রস্তাব দেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
কেউ কেউ বলছেন পাঁচ সিটি নির্বাচনে বিপর্যয়ের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে দলটির মধ্যে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে গুজবের ডালপালা। কখনো দলের সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগের কথা, কখনো মন্ত্রিসভায় রদবদলের মতো গুঞ্জন হাওয়ায় ভাসছে। দলের মধ্যে বিশেষ একটি মহল সময়-সুযোগ বুঝে আশরাফকে বলি দিতে এ খেলা খেলছে ।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পরে কে কাকে দোষ দিয়ে পার পেতে পারেন- সে চেষ্টা চলছে প্রতি মুহূর্তে। আর এই খেলায় দলের ভেতরের নেতারাই সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে ‘বলির পাঁঠা’ বানিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের খেলায় মেতেছেন। এরই অংশ হিসেবে আশরাফের পদত্যাগের গুজব মাঠে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, গাজীপুর নির্বাচনের পর সুযোগ কাজে লাগিয়ে আশরাফকে ঘিরে দলেও সৃষ্টি হয়েছে বিভাজন।দলের একটি অংশ দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পরিবর্তন আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ কাউন্সিলেরও দাবি করেছে। বলা যায় দলে এখন প্রচণ্ড অস্থিরতা চলছে। কখন কী হয় বলা যাচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের একটি অংশ চায় সৈয়দ আশরাফ পদত্যাগ করে দল থেকে বিদায় নিন।
সুত্র মতে, সৈয়দ আশরাফ এক-এগারোর সময় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দলের একটি অংশ তাকে মেনে নিতে পারেনি। তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরও এ অংশটি তার বিপক্ষে ছিল। গত বছরও একবার তার পদত্যাগের গুজব ওঠে। পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের পর এ অংশটি তার বিপক্ষে আবার সরব হয়। সৈয়দ আশরাফের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ হচ্ছে, তিনি দলে সময় দিতে চান না। সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর কয়েকটি জেলায় দলীয় জনসভায় গেলেও তিনি জেলাভিত্তিক কোনো বর্ধিত সভা করেননি, ঢাকার বাইরে সাংগঠনিক সফরেও যাননি। দলীয় কার্যালয়েও তিনি খুব একটা যান না। জেলা বা কেন্দ্রীয় নেতারা সব সময় তাকে পান না বলেও অভিযোগ করেন। এমনকি তিনি দলীয় নেতাদের সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ রাখতে চান না। সচিবালয়ে নিজ দপ্তরেও তিনি নিয়মিত যান না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর তিন দিন ধরে গণভবনে থেকেই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে কয়েক দফা বৈঠক করেন। এ।সময় তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ।
তবে এ দলাদলির বাইরে থাকা একটি অংশ মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের আগে কাউন্সিল হলে বা নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হলে দলে অনৈক্য বাড়বে। আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে।তাই দলে এ মুহুর্তে বড় পরিবর্তন নাও আনা হতে পারে।