ট্রাম্পের হুমকির জবাবে যা বললেন সৌদি যুবরাজ সালমান
দিন দুয়েক আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক সমাবেশে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেয়ার সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের প্রতি হুমকি দিয়ে বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সহায়তা ছাড়া সৌদি সরকার বা রাজতন্ত্র দুই সপ্তাহও টিকতে পারবে না।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের আশা ছিল, ঘনিষ্ট মিত্র হওয়া সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই হুমকি ও বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া জবাব দিবে সৌদি আরব। বিশেষ করে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে নিন্দা জ্ঞাপন করা হবে। তবে আদতে কি তেমন কিছু বলা হয়েছে সৌদি বাদশাহ বা যুবরাজের পক্ষ থেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্লুমবার্গ পাবলিকেশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন,‘আমি তার (ট্রাম্পের) সাথে কাজ করতে ভালবাসি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ডোনাল্ড ট্রাম্প একসাথে কাজ করে মধ্যপ্রাচ্যে অনেক কিছু অর্জন করেছেন। বিশেষ করে উগ্রপন্থা, সন্ত্রাসবাদ এবং আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অগ্রগতি অনেক।’
সাক্ষাৎকারটি গত বুধবার গ্রহণ করা হলেও প্রকাশ করা হয় গতকাল শুক্রবার।
নিরাপত্তার জন্য সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন করে কোন অর্থ পরিশোধ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেন, ‘‘আসলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমরা যত সমরাস্ত্র, সামরিক উপকরণ ও সেবা গ্রহণ করেছি সবই অর্থের বিনিময়েই গ্রহণ করা হয়েছে।অর্থ ছাড়া কোন কিছুই গ্রহণ করা হয়নি।’’
বিন সালমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক যখন থেকে শুরু হয়, তখন থেকেই আমরা অর্থ দিয়েই সবকিছু ক্রয় করেছি।তিনি আরো বলেন, ”ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর আমরা আগামী ১০ বছরে আমাদের প্রয়োজনীয় যাবতীয় সামরিক চাহিদার ৬০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেই ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
৩৩ বছর বয়সী সৌদি ক্রাউন প্রিন্স আরো বলেন,‘মিত্র ও বন্ধুদের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে ঐক্য ও মতানৈক্য হওয়া স্বাভাবিক। তাছাড়া আপনাকে স্বীকার করতেই হবে যে, যেকোনো বন্ধু ভালো ও খারাপ উভয় বিষয়েই কথা বলবে। কোন বন্ধুই আপনার বিষয়ে ১০০ ভাগ ভালো কথা বলবে না। এমনকি সেই বন্ধু যদি পরিবারের ভিতরের সদস্য হলেও বলবে না। মিত্র বা বন্ধু যত ঘনিষ্টই হোক, ভুল বোঝাবুঝি থাকবেই। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে আমরা ভুল বোঝাবঝি হিসেবেই বিবেচনা করছি।
বুধবার মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে এক সমাবেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রিয়াদকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটন সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিলে সৌদি সরকার দুই সপ্তাহও টিকতে পারবে না। পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে রক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।