ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদর দপ্তরে বিএনপির মানববন্ধন ও সমাবেশ

এনায়েত হোসেন সোহেল, বেলজিয়াম থেকে: ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১২ তম অধিবেশন চলাকালে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিএনপি। ১৯ অক্টোবর শুক্রবার সকালে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের ইইউর সদর দপ্তরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মী বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি,দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপর থেকে আরোপিত মামলায় সাজা প্রত্যাহার, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে এ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় নেতা কর্মীরা বিভিন্ন ধরনের লেখা প্লেকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান ও সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনের নেতৃত্বাধীন ও বেলজিয়াম বিএনপির ব্যবস্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেষ্টিত এ মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাহিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি রহিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, ফ্রান্স বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সিরাজুর রহমান, সাবেক সহ সভাপতি সাহেদ আলী, সাবেক সহ সভাপতি মাহবুব আলম রাঙ্গা, সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল খান, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সহ সাধারণ সম্পাদক আরিফ হাসান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুর রহমান, জিয়ার সৈনিক ফ্রান্সের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, সুইডেন বিএনপির উপদেষ্টা মহিউদ্দিন জিন্টু, সুইডেন বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক কচি, নেদারল্যান্ড বিএনপির সভাপতি শরীফ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক ওহিদ উদ্দিন, মহিলা সম্পাদিকা কেয়া খান, মহিলা সভানেত্রী আফরুজা চৌধুরী, জার্মান বিএনপি সভাপতি আকুল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক গনি সরকার, যুগ্ম সম্পাদক মুস্তাক খান, আয়ারল্যান্ড বিএনপি সভাপতি হামিদুল নাসির, সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ, ইতালি বিএনপির সাবেক সভাপতি তাইফুর রহমান ছোটন, সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ঢালি নাসির উদ্দিন, সুইডেন বিএনপি সভাপতি এমদাদ হোসেন কচি, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আবেদীন মোহন, বিএনপি নেতা রেজাউল করিম শিশির, ডেনমার্ক বিএনপির সভাপতি গাজী মনির আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, গ্রীস বিএনপির সভাপতি মখলেছুর রহমান, ফিনল্যান্ড বিএনপির সভাপতি কামরুল হাসান জনি, নরওয়ে বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান জুনায়েদ, স্পেন বিএনপির সভাপতি খুরশেদ আলম মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম পংকি, অস্ট্রিয়া বিএনপি নেতা নেয়ামুল বশির, ফজলুর রহমান বকুল, সুইজারল্যান্ড বিএনপির নেতা শেখ আনোয়ার কবির মোল্লা, বেলজিয়াম বিএনপির সহসভাপতি আলী জাহাঙ্গীর, আবুল হাসনাত, শামছুল, রাকিব হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আলীনুর শামীম, যুগ্ম সম্পাদক আশিক আহাম্মদ বাপ্পি, যুগ্ম সম্পাদক হারুন মাকসুদুল হাসান মমো, ফ্রান্স বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সালা উদ্দিন বালা, মামুনুর রশীদ মামুন, সোয়েব আহমেদ জিনুক, সাইদুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান আখতার, হাসিব আলী, মোঃ নাজির উদ্দিন, ইমরুজ হোসেন, শাওন আহমেদ, নাজমুল ইসলাম সায়েম, আমরা জিয়ার সৈনিক ফ্রান্স শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া মিল্টন, মনির মোল্লা, ফয়সাল আহমেদ, খোরশেদ আলম মাতবর, ডাঃ জাকির, মোহাম্মদ নুরুল আলম, জাকির হোসেন, নাজিম উদ্দিন জুয়েল জনি, এনামুল, লায়েক ও জলিল প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতার পরিবর্তন হোক। আর মানুষ পরিবর্তন চায়। খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রাখবেন আর আপনি নির্বাচন করবেন, এ নির্বাচন হবে না। মানুষ মেনে নেবে না।বক্তারা বলেন, গোটা দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। তারা এ সরকারের পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনটা চায় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। নির্বাচন অবশ্যই সবার কাছে অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিকেল ৪টায় ব্রাসেলসে অবস্থিত ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন প্রেসক্লাবে বিএনপির পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। এ সময় নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন বন্ধে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের কাছে নিন্মলিখিত ৭টি দাবী পেশ করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান। দাবীগুলো হচ্ছে-
১. ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে মুক্ত, ন্যায্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা, এরপর সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি পক্ষপাতহীন প্রশাসন গড়ে তোলা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সকল রাজনৈতিক বন্দী এবং সকল বিরোধী নেতাকর্মী ও কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা।
২. নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন, পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের ব্যবহার না করা, নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করা।
৩. স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় প্রকাশনায় গণমাধ্যম, সামাজিক প্রচার মাধ্যম ও সমাবেশে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
৪. কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিক, সামাজিক ও সড়ক নিরাপত্তায় প্রতিবাদকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার এবং নির্বাচনী নিরাপত্তা ও কোটা পদ্ধতি সংস্কারের মামলায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের মুক্তি এবং ডিজিটাল সিকিউরিটিসহ সকল দমনমূলক আইন বাতিল করা।
৫. নতুন নির্বাচিত সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের ১০ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেটি ক্ষমতা দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করা।
৬) নির্বাচনের সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের নিষেধাজ্ঞা, প্রেস এবং মিডিয়া জনগণের উপর যে কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা মুক্ত থাকা।
৭) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত নির্বাচনের সময়ে সব চলমান পুলিশি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা। এইসময়ে নতুন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মামলা গুলির উপর জোর না দেওয়া।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button