সামনে আমেরিকা, পেছনে চীন, মধ্যখানে বাংলাদেশ
নিউইয়র্ক থেকে এনা : এবার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন কক্ষের আসন এমনভাবে সাজানো হয়েছে, সামনে আমেরিকা, পেছনে চীন এবং মধ্যখানে বাংলাদেশ ডেস্ক। অর্থাৎ সামনে বসবেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, পেছনে বসবেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ঈ এবং মাঝখানের ডেস্কে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ অধিবেশনের শীর্ষ বৈঠকের মিলনায়তনের এ আসন বিন্যাসের তথ্য বার্তা সংস্থা এনাকে জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ মোমেন। ড. মোমেন বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। এ দিন জাতিসংঘ মহাসচিব প্রদত্ত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন সারাবিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা। শেখ হাসিনাও থাকবেন সেখানে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টায় শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক ফোরামে ‘টেকসই উন্নয়ন’ সম্পর্কিত গবেষণামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন প্রধান বক্তা হিসেবে। ২০১৫ সালের পর এ বিশ্ব কীভাবে উন্নয়নের পথে ধাবিতে হতে পারে সে ব্যাপারে কথা বলবেন শেখ হাসিনা।
ড. মোমেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলতে পারেন, এত সম্পদ থাকা সত্বেও আজ অবধি এ বিশ্ব দারিদ্র্য মুক্ত হয়নি-এটি আমাদের সকলের জন্যেই লজ্জার বিষয়। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করতে পারেন, উন্নত বিশ্বের পররাষ্ট্র নীতিই হচ্ছে গরিব অথবা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ওপর খবরদারি করা এবং দেশে-দেশে হানাহানি অথবা যুদ্ধ লাগিয়ে নিজেদের আধিপত্য সংহত করা।
শেখ হাসিনা বলতে পারেন, এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। এখন আমাদের সকলকে মানবতার স্বার্থে কিছু করার সংকল্প গ্রহণ করতে হবে, যেখানে থাকবে না হিংসা-বিদ্বেষ আর হানাহানি। দারিদ্র বিমোচনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করতে পারেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি নারী-পুরুষ সকলের ক্ষমতায়নের রূপরেখা আবারো উল্লেখ করতে পারেন। এছাড়া অর্থনৈতিক কাঠামোকে দুর্নীতিমুক্ত করার ব্যাপারেও মতামত ব্যক্ত করবেন শেখ হাসিনা।
২৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা সকলের জন্যে শিক্ষা সম্পর্কিত আরেকটি শীর্ষ সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নেবেন। জাতিসংঘ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) বিষয়ক এক আলোচনা সমাবেশে শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি অস্ত্র মুক্ত বিশ্ব গড়ার একটি অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন।
আগেই জানানো হয়েছে ২৭ সেপ্টেম্বর অপরাহ্নে শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় তার বক্তব্য রাখবেন। এরপরই তিনি মিডিয়ার সাথে মতবিনিময় করবেন।
২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ০১ মিনিটে তার হোটেল লবিতে দলীয় নেতাকর্মীরা কেক কেটে শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন করবেন। পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা হোসেন পুতুল, নাতী-নাতনীসহ নিজের জন্মদিন পালন করবেন নিতান্তই পারিবারিক আমেজে নিজ হোটেল কক্ষে। জাতিসংঘের কাছে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে অবস্থান করবেন শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, ২৮ সেপ্টেম্বর হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। এ দিন সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
সাক্ষাৎকার নেই
এবার জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদানকালে প্রধানমন্ত্রী বিদেশী কোন মিডিয়াকে সাক্ষাতকার দিচ্ছেন না। রাষ্ট্রদূত ড. মোমেন এনাকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, আল জাজিরা, নিউইয়র্ক টাইমস এবং আরো কয়েকটি মিডিয়া সময় চেয়েছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর হাতে সময় নেই বিধায় আমরা অপারগতা প্রকাশ করেছি। তবে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস কিংবা আন্তর্জাতিক কোন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা হোটেল কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।