সিলেটে অপ্রতিরোধ্য নিত্যপণ্যের বাজার
পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে সিলেটে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।
রমজানে কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছে অস্বাভাবিকভাবে। তবে আলু, পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা, তেল ও ডালসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অনেকটা আগের মতোই আছে।
শহরে এক দাম আর গ্রামে আরেক দাম। কোনো পণ্যের দামই আর ক্রেতার নাগালের মধ্যে নেই। কোনো কারণ ছাড়াই প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে।
বাজারে সরবরাহ প্রচুর অথচ বেগুন, কাঁচা মরিচ, টমেটো, শসা, পেঁয়াজসহ কোনো পণ্যই আর সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে নেই।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চেম্বার অব কমার্স প্রশাসনের বাজার মনিটরিং কমিটি রোজার জন্য কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও কেউ এর পরোয়া করছেন না।
রোজা শুরুর পর রবিবার সিলেটের কাঁচাবাজারগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে ক্রেতার ভীড় ছিল বেশি। কিন্তু বাজারে ঢুকেই নিত্যপণ্যের দাম শুনে ক্রেতাদের মাথা গরম হওয়ার পালা।
পাইকারী বাজারগুলোতে ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়ানোর কারণে বাধ্য হয়েই তাদের বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে হয় বলে জানালেন জৈন্তাপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন।
ক্রেতারা অভিযোগ করেন, ২৪ ঘণ্টা আগের চেয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যুক্তিহীনভাবে। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণ পর্যন্ত বেড়েছে।
নগরীর লালবাজার, ব্রহ্মময়ীবাজার, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের চড়া দামে সবজি বিক্রি করতে দেখা যায়। এক সপ্তাহ আগেও যে কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা কেজি ছিল, সেই মরিচ রবিবার বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটোর দাম ১০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫০-১৭০ টাকা।
ইফতারের অন্যতম উপকরণ বেগুনের দাম ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা পর্যন্ত। রবিবার প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আগের দিনও এই সবজিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে ক্রেতারা জানান।
গাজরের কেজি ৩৫ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। শসার দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০, পটল ২৫ থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। ২৫ টাকার কাঁকরোল এখন ৩৫ টাকা, ৩৫ টাকার করলা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের অগ্নিমূল্যের কারণে পেঁপের দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫-৩০ টাকা এবং আলুর দাম কেজিতে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, মাছের বাজারেও একই চিত্র। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশির ভাগ মাছের দাম কেজিতে গড়ে ৫০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি রুই ৪০০, কাতল ৪০০, বোয়াল ৬০০, পাঙ্গাশ ১৬০, তেলাপিয়া বড় ১৮০ ও এক কেজি ওজনের ইলিশ দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। ডিমের দামও হালিতে তিন টাকা বেড়ে ৩৫-৩৬ টাকা হয়েছে। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা ও খাসি কেজি প্রতি ৪২০- ৪৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।