চার মাসে প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ৫১০ কোটি ডলার
রেমিটেন্স বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২.১ বিলিয়ন ডলার
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসীরা ৫১০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দর বৃদ্ধি, স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও রেমিটেন্সে তেজিভাব অব্যাহত রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৫০৯ কোটি ৫৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে অক্টোবর মাসে এসেছে ১২৩ কোটি ৯১ লাখ ডলার। গত বছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশে ৪৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল। এই হিসাবে চার মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। আর পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে এই অক্টোবর রেমিটেন্স বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই রেমিটেন্স ১৩ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
গত অর্থবছর ১৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হলেও রেমিটেন্স ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়নি, কারণ তার আগের বছর রেমিটেন্স অনেক কম এসেছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিটেন্সে ভালো প্রবৃদ্ধি হলেও তা আগস্টে থাকেনি। সেপ্টেম্বরে আবার ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের মতো ভালো প্রবৃদ্ধি এবার না-ও হতে পারে। রেমিটেন্স বৃদ্ধির ধারা ধরে রাখতে হলে যেসব শ্রমিকদের বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছি, তাদের অবশ্যই দক্ষ করে পাঠাতে হবে। পাশাপাশি তারা যেন কোনো ঝামেলা ছাড়া কম খরচে দ্রুত টাকা দেশে পাঠাতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সের নিম্নগতি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল। রেমিটেন্স বাড়াতে মাশুল না নেয়াসহ নানা ঘোষণাও দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাশুল কমানোর সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি, স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে গত অর্থবছর রেমিটেন্স বাড়ে। খরা কাটিয়ে বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ অর্থবছর শেষ করে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে।
বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশের জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। রেমিটেন্স বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও রয়েছে সন্তোষজনক অবস্থায়। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভে ছিল ৩২.১ বিলিয়ন ডলার।