‘এশিয়ার সেরা টেস্ট ভেন্যু সিলেট স্টেডিয়াম’
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে টেস্ট অভিষেক হলো সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের। দেশের অষ্টম ও বিশ্বের ১১৬তম ভেন্যু হিসেবে টেস্ট ম্যাচের স্বাদ নিলো সিলেটের মাটি। সবুজ চা-বাগান ও পাহাড়ের টিলা দিয়ে ঘেরা দেশের অন্যতম নয়নাভিরাম সিলেটের এই স্টেডিয়াম বিশ্বের সেরা ভেন্যু বলে আখ্যায়িত করছেন জাতীয় দলের হয়ে খেলা ২৪টি টেস্ট ও ৪৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা সিলেটের রাজিন সালেহ। সিলেটের এমন আনন্দঘন মূহূর্তের দিন সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তিনি। আগামী ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জাতীয় লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের পরই সব ধরনের ক্রিকেটের ইতি টানবেন বলে জানান রাজিন।
সিলেটের অভিষেকের টেস্টের দিন লোকাল বয় হিসেবে অন্যান্য খেলোয়াড়দের সাথে মাঠে উপস্থিত ছিলেন রাজিন। ম্যাচ চলাকালীন দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। রাজিন বলেন, ‘এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়ার মধ্যে সেরা একটি টেস্ট ভেন্যু। এখানে বেশি বেশি খেলা আয়োজন করা দরকার।’
সিলেটের অভিষেক টেস্টের দিন নিজেকে গর্বিত মনে করছেন রাজিন। তিনি আরো বলেন, ‘আজকের আনন্দের দিনে আমি গর্বিত বোধ করছি।’
১০০ টেস্ট খেলার স্বপ্ন ছিলো রাজিনের। কিন্তু দেশের হয়ে ২৪ ম্যাচের বেশি খেলতে পারেননি তিনি। ২০০৩ সালে টেস্ট অভিষেকের পর ২০০৮ সালে জাতীয় দলের সর্বশেষ টেস্ট খেলেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। ভবিষ্যতে ক্রিকেটের সাথেই থাকার ইচ্ছা রয়েছে তার। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমিও ক্রিকেটের জন্য কিছু দিতে চাই। সিলেট বিভাগের ক্রিকেটের জন্য কিছু করার আগ্রহ আছে আমার।’
সিলেটে ভালো ব্যাটসম্যান খুঁজে বের করে আনতে ভবিষ্যতে ব্যাটিং কোচ হিসেবে কাজ করতে চান রাজিন। তিনি বলেন, ‘খুব শিগগির খেলা থেকে বিদায় নিয়ে কোচিংয়ে মনোযোগ দিবো আমি।’
সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা থাকায় এই জেলা থেকে ভবিষ্যতে আরো খেলোয়াড় বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন রাজিন। তিনি বলেন, ‘এই ভেন্যুতে সব সুবিধা থাকায় ভবিষ্যতে এখানে ভালো মানের খেলোয়াড় তৈরি হবে। এর মাধ্যমে সিলেটের ক্রিকেটের দুঃসময় দূর হবে।’
বাংলাদেশের হয়ে সাতটি হাফ-সেঞ্চুরিতে টেস্টে ১১৪১ রান ও একটি সেঞ্চুরি ও ছয়টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ওয়ানডেতে ১০০৫ রান করেন ৩৪ বছর বয়সী রাজিন। ২০০৪ সালে অধিনায়ক হিসেবে দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। দুটি ম্যাচই হেরেছে বাংলাদেশ।
এমন অভিজ্ঞতা নিয়ে দীর্ঘ দুই দশকের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়ে দেন রাজিন। অশ্রুসিক্ত নয়নে রাজিন বলেন, ‘আপনারা সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন, ক্রীড়া সাংবাদিকদের লেখনিতেই আমি রাজিন সালেহ হয়েছি। আমার পরিবার, বন্ধু স্বজনসহ সমর্থকদের জন্যই আমি আজকের রাজিন সালেহ। এনসিএলের ম্যাচ দিয়ে আমি প্রতিযোগিতা মূলক ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি।’