যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন: মাঠ কাঁপাচ্ছেন মুসলিমরা

নির্বাচনে লড়ছেন প্রায় ১০০ মুসলিম প্রার্থী

দিন গড়ালেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এবারের নির্বাচন বেশ কয়েকটি কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনের তোপে পড়ার সম্ভাবনা তো রয়েছেই; পাশাপাশি রেকর্ডসংখ্যক মুসলিম ও নারী প্রার্থী থাকায় বিশ্ববাসীর আগ্রহ একটু বেশি।

মঙ্গলবারের নির্বাচনে লড়ছেন প্রায় ১০০ মুসলিম প্রার্থী। ২০১৬ সালের চেয়ে এ সংখ্যা ছয় গুণ বেশি। ক্ষমতায় বসেই মুসলিমদের প্রতি রোষানল, টুইটারে বিষোদগার ও মুসলিম শরণার্থীদের প্রতি ট্রাম্পের উগ্র-বাক্যবিলাপের কারণেই মার্কিন রাজনীতিতে মুসলিমদের অংশগ্রহণ বাড়ছে- পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর এমনটাই দাবি।

সাড়ে ৩৪ লাখ মুসলিম নাগরিকের বাস যুক্তরাষ্ট্রে। নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন রাশিদা তিলাইব (৪২) ও ইলহান ওমর (৩৬)। উভয়েই ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী। প্রত্যাশা করা হচ্ছে তারা দু’জনই সহজ জয় পাবেন। এমনটি হলে তারা হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম যুগ্ম মুসলিম কংগ্রেসওমেন।

মিশিগানের ১৩তম কংগ্রেশনাল ডিসট্রিক্ট থেকে লড়ছেন ফিলিস্তিনি-আমেরিকান তিলাইব। ইলহান লড়ছেন মিনেসোটার পঞ্চম ডিসট্রিক্ট থেকে। তিনি সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন ১৪ বছর বয়সে। টেনেসি ডিস্ট্রিক্ট-৪৫ থেকে ডেমোক্রেটিক দলে লড়ছেন আরেক মার্কিন মুসলিম নারী হানা আলী।

বিপুলসংখ্যক মুসলিমদের রাজনীতিতে পা রাখার পেছনে ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী উত্তপ্ত বক্তব্যকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।

নিউইয়র্ক টাইমসের নিবন্ধক ওয়াজাহাত আলি বলেন, ‘৯/১১ হামলার পর মুসলিম মার্কিনিরা সংস্কৃতি-রাজনীতিসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে নিজেদের সম্পৃক্ত করছেন। ট্রাম্পের মুসলিমবিরোধী মনোভাবের জবাব দিতেই তাদের এ প্রয়াস।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াইয়ের একটাই পথ, শুধু মুসলিমদের জন্য নয় বরং মার্কিন মূল্যবোধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব করা।’

এদিকে অধিকাংশ রিপাবলিকানদের বিশ্বাস, ইসলাম ধর্ম আমেরিকার মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সম্প্রতি মার্কিন থিংকট্যাংক নিউ আমেরিকা প্রকাশিত এ জরিপে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশ মার্কিনি মনে করেন, দেশপ্রেমে ঘাটতি রয়েছে মুসলিম নাগরিকদের মধ্যে। ৫০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, মার্কিন নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থী হঠাৎ বেড়ে যাওয়াটা রাজনীতির জন্য শুভকর নয়।

আইনজীবী ও অধিকারকর্মী দিদরা আব্বুদ বলেন, অন্য অভিবাসী গ্রুপগুলোর মতো মুসলিম আমেরিকানরাও ১৫ বছর আগে রাজনীতিতে আসার ব্যাপারে খুব একটা নিশ্চিত ছিল না। কিন্তু ৯/১১-এর ইসলামোফোবিয়ার ঢেউয়ে অনেককেই মাথা নিচু করে রাখতে হয়েছে।

কিন্তু মূলধারার রাজনীতিতে মুসলিমদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো হলেও হয়রানি বন্ধ হতে হয়তো আরও কয়েক বছর লেগে যাবে। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (কেয়ার) তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিরোধী ঘৃণা থেকে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে ২১ শতাংশ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button