যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের বলি কি কেবল ৫ লাখ মানুষ?
সত্যকে খুন করেই যুদ্ধের সূচনা (In war, truth is the first casualty); ট্রয় যুদ্ধের পটভূমিতে হোমারের রচিত ইলিয়াড মহাকাব্যের কেন্দ্রীয় চরিত্র অ্যাকিলিস উপলব্ধি করেছিলেন এই বাস্তবতা। ২০০১ সালের টুইন টাওয়ার হামলার অজুহাতে ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ’র সূচনা করে ইঙ্গ-মার্কিন জোট। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ আর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সেই নিরন্তর যুদ্ধবাজি এরইমধ্যে ইরাক-আফগানিস্তান হয়ে সোমালিয়া পরিভ্রমণ করেছে। সন্ত্রাসবিরোধিতার মিথ্যা বয়ানে রচিত প্রেক্ষাপটে সংঘটিত এই নিরন্তর যুদ্ধে খুন হয়েছে পৃথিবীর সব থেকে বড় সত্য, যার নাম মানবিকতা। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এক প্রকল্পের গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ১৭ বছরের এই যুদ্ধে সরাসরি নিহত হয়েছে ৫ লাখ মানুষ। তবে ওই পরিসংখ্যান সামগ্রিক মৃত্যুর তথ্য হাজির করতে সক্ষম হয়নি। হিসেব করেছে কেবল আফগানিস্তান-ইরাক আর পাকিস্তানে নিহত হওয়া মানুষের সংখ্যা। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ করাটা দুঃসাধ্য প্রায়; বাস্তবে এই তা অনেক বেশি হতে পারে। আর কেবল মানুষের মৃত্যু নয়, ১৭ বছরের এই যুদ্ধ পৃথিবীজুড়ে শরণার্থী সংকটকে ঘনীভূত করেছে, বাড়িয়েছে সম্প্রদায়গত বিভেদ, পুষ্ট করেছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা আর বিদ্বেষের বিষাক্ত বীজকে। যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রীয় নীতি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করেছে, বাড়িয়েছে বেকারত্ব, সৃষ্টি করেছে তীব্র হতাশা।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন ক্ষমতাকেন্দ্র পেন্টাগন আর টুইন টাওয়ারে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। একে অজুহাত বানিয়ে তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ শুরু করেন অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ। বিগত ১৭ বছর ধরে চলমান এই যুদ্ধ-বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউটের কস্টস অব ওয়ার প্রকল্প তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে। তিনটি দেশেই যুদ্ধের তীব্রতা সম্প্রতি কিছুটা কমেছে। যদিও ২০১৮ সালে আফগানিস্তানে নিহত বেসামরিক মানুষের সংখ্যা যুদ্ধকালীন সময়ে এক বছরে নিহতের সর্বোচ্চ সংখ্যার একটি। প্রকল্পটির স্টেফানি সাভেল বলেছেন, নতুন লাশের সংখ্যা এটাই জানান দেয় যে যুদ্ধ স্থিমিত হওয়ার চেয়ে আরও তীব্র হচ্ছে। কস্টস অব ওয়ার প্রকল্পের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের প্রত্যক্ষ বলি হওয়া মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৫ লাখ ৭ হাজার। ২০০১ সালে সিরিয়ায় শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা অন্তর্ভূক্ত না। সিরিয়ায় এ পর্যন্ত নিহত মানুষের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি। এছাড়া এই নিহতের সংখ্যা যুদ্ধের পরোক্ষ প্রভাবে নিহত যেমন, খাদ্যাভাব, পানি সংকট, হাসপাতাল ও বিদ্যুতের না থাকার কারণে মৃত্যুর সংখ্যাও অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। এই প্রতিবেদনে শুধু মার্কিন সেনাবাহিনী, তাদের চুক্তিবদ্ধ বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জাতীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ এবং তাদের মিত্রদের হাতে নিহতের সংখ্যার কথা বলা হয়েছে। নিহতদের অর্ধেকই বেসামরিক নাগরিক। ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে নিহত বেসামরিকের সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার থেকে ২ লাখ ৬৬ হাজার। শুধু ইরাকেই নিহত বেসামরিকের সংখ্যা ২ লাখ ৪ হাজার। বোস্টন ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক নেতা. সি. ক্রাউফোর্ড বলেন, ১৭ বছর ধরে চলমান যুদ্ধে এই নিহতের সংখ্যাকে শুধু আঁচড় বলা যায়। আর যুদ্ধের এই ভয়াবহতার প্রতিবেদন নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এক টুইটে লিখেছেন, মার্কিন করদাতাদের মাসুল: ৭ হাজার নিহত আমেরিকান ও ৫.৬ ট্রিলিয়ন। মধ্যপ্রাচ্যের মাসুল: সীমাহীন।
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার পর নতুন করে সামনে আনার চেষ্টা করা হয় ইসলাম আর পাশ্চাত্যের সংঘাতের প্রশ্নকে। পাশ্চাত্যের প্রচারণা-প্রকৌশল ছড়াতে থাকে ইসলামবিরোধী ঘৃণা আর বিদ্বেষ। সেই ঘৃণা আর বিদ্বেষকে সঙ্গী করে নির্মাণ করা হয় ইসলামফোবিয়ার তথা ইসলামভীতির সংস্কৃতি।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধে হতাহতের বিষয়ে খবর সংগ্রহে সীমাবদ্ধতা থাকায় ৯/১১ পরবর্তী মার্কিন যুদ্ধে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা জানা পুরোপুরি অসম্ভব। যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সব সময়েই অনিশ্চয়তা থাকে। আমরা হয়ত কত জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন তা জানতে পারি কিন্তু অন্যান্য নিহতের কথা জানতে পারি না। হয়ত আমরা যুদ্ধে সরাসরি নিহতদের সংখ্যা কখনোই জানতে পারব না। যেমন, আইএসের কাছ থেকে ইরাকের মসুলসহ অন্যান্য শহর উদ্ধারে হয়ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু তাদের মরদেহ খুঁজে পাওয়া যাবে না।
যুদ্ধাঞ্চলে স্থলমাইন ও বিস্ফোরকের ব্যবহার নিত্য ঘটনা। আফগানিস্তানে স্থল মাইনে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৪ সালে হতাহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২৯৬, ২০১৫ সালের ১ হাজার ৫৮৭, ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৪৩ জনে। ইরাকে বিস্ফোরক ও স্থলমাইনে হতাহতের সংখ্যা ২০১৪ সালে ছিল ৬৩, ২০১৫ সালে ৫৮ ও ২০১৬ সালে ১০৯ জন।
যুদ্ধাঞ্চলে বাস্তুচ্যুতির ঘটনা যুদ্ধে আক্রান্ত মানুষের জন্য এক চরম বাস্তবতা। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাঞ্চলগুলোতে কয়েক মিলিয়ন শরণার্থীর সংখ্যা নথিভুক্ত করেছে। যুদ্ধের শরণার্থীরা সংশ্লিষ্ট পুরো অঞ্চলে প্রভাব রাখছে। আফগানিস্তানের ২.৬ মিলিয়ন শরণার্থীর অর্ধেকই আছেন পাকিস্তানে। ৯ লাখ আফগান বাস করছেন ইরানে। ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসবিরোধী যুদ্ধের শরনার্থীদের বেশির ভাগ রয়েছেন তুরস্কে। এই সংখ্যা প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন। ইরানেও রয়েছেন সিরীয় ও আফগান শরণার্থী। এই সংখ্যাও প্রায় দশ লাখের কাছাকাছি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৭ বছরের এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ব্যয় করেছে ২ হাজার ১২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০২-২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট বুশ ১.১৬১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা প্রতিরক্ষা ব্যয় কমানো এবং সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ শব্দবন্ধ ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন। তবু তার আমলে এই যুদ্ধে ব্যয় হয় ৮০৭ বিলিয়ন। যা ছিল বুশের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালের বাজেটে ৩০ বিলিয়ন ডলার যুক্ত করেছেন আর ২০১৮ সালের বাজেটে ১২৭ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের খাতে। সবমিলিয়ে ট্রাম্পের প্রথম দুই বছরে ব্যয় দাঁড়াবে ১৫৭ বিলিয়ন ডলার।
কস্টস অব ওয়ার প্রকল্পের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে ৫.৬ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে সৌফান গ্রুপ জানায়, সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিদিন ৯.৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে।
মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব: মার্কিন অর্থনীতিতে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বড় ধরনের প্রভাব ছিল। যুক্তরাষ্ট্রকে ঋণ করতে হয়েছিল ২.১ ট্রিলিয়ন ডলার। যা মোট ঋণের ১০ শতাংশ। ভিয়েতনাম যুদ্ধের চেয়ে বেশি দিন চলমান ইরাকযুদ্ধ। এই যুদ্ধে ৪ হাজার ৪৮৮ জন মার্কিন সেনা নিহত ও ৩২ হাজার ২২৬ জনের বেশি আহত হয়েছেন। মার্কিন করদাতারা শুধু ইরাক যুদ্ধের জন্য ব্যয় করেছে ৮০০ বিলিয়ন ডলার। ঋণ বাড়ানোর মধ্যেই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে সত্যিকার আর্থিক মূল্য নিহীত নয়। এই যুদ্ধে কারণে যে চাকরিচ্যুতি, কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে যে অর্থ যুক্ত হয়েছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা খাতে ১ বিলিয়ন ব্যয়ে ৮ হাজার ৫৫৫ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় এবং অর্থনীতিতে ৫৬৫ মিলিয়ন যুক্ত হয়। যদি এই ১ ট্রিলিয়ন ডলারকে কর অব্যাহতি দিয়ে ব্যয় করা হতো ১৯ হাজার ৭৭৯ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনীতিতে ৫০৫ মিলিয়ন ডলার যুক্ত করতো। চিকিৎসা খাতে এই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হলে ১৭ হাজার ৬৮৭ কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে ১.৩ বিলিয়ন যুক্ত হতো। সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যে ২.১ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে তাতে ১৮ মিলিয়ন কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু তা যদি শিক্ষাখাতে ব্যয় হতো তাহলে ৩৮ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো। যা মার্কিন অর্থনীতির সংকট কাটিয়ে উঠতে আরও বেশি সহযোগিতা করতো।
২০১৫ সালে নেভাডার এক বৈঠকে ছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ভাই জেব বুশ। হঠাৎই এক কলেজ শিক্ষার্থীর অভিযোগের মুখে পড়েন তিনি, ‘তোমার ভাই আইএস তৈরি করেছে।’ সেসময় রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট মনোনয়নপ্রত্যাশী আইএস সৃষ্টিতে ওবামাকে দায়ী করেছিলেন, নিজ ভাইকে আড়াল করতে। বলেছিলেন, ২০১১ সালে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার কারণেই আইএস সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেনা প্রত্যাহার নয়, ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন থেকেই যে আইএস-এর সৃষ্টি হয়েছে তা উঠে এসেছে বিভিন্ন প্রতিবেদন ও বিশ্লেষকের মন্তব্য থেকে। স্বনামধন্য মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্টারসেপ্ট-এ প্রকাশিত এক রচনায় ব্রিটিশ সাংবাদিক ও কলাম লেখক মেহদি হাসান আইএসের উত্থানের পেছনে মার্কিন আগ্রাসনকে দায়ী করেছেন। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে চিলকট প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে প্রকাশিত কিছু গোয়েন্দা নথি বিশ্লেষণ করে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানেও ইরাক অভিযানের কারণে আইএস-এর উত্থান ঘটেছে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে বিকল্পধারার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ডেমোক্র্যাসি নাউ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন ভাষাবিদ ও রাজনীতি বিশ্লেষক নোম চমস্কি আইএস-এর জন্মকে ইরাক যুদ্ধের প্রধানতম ফলাফল আখ্যা দেন। সেখানকার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ক্ষত থেকেই আইএস সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার পর নতুন করে সামনে আনার চেষ্টা করা হয় ইসলাম আর পাশ্চাত্যের সংঘাতের প্রশ্নকে। পাশ্চাত্যের প্রচারণা-প্রকৌশল ছড়াতে থাকে ইসলামবিরোধী ঘৃণা আর বিদ্বেষ। সেই ঘৃণা আর বিদ্বেষকে সঙ্গী করে নির্মাণ করা হয় ইসলামফোবিয়ার তথা ইসলামভীতির সংস্কৃতি। ধারাবাহিকভাবে এর বলি হচ্ছেন মার্কিন মুসলিমরা। নাইন ইলেভেনকে উপজীব্য করেই নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচারণার অস্ত্র করেছিলেন ইসলামকে। ছড়িয়েছিলেন মুসলমানবিরোধী নানান রেটরিক। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মুসলিমবিরোধী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান এক ইমাম বিদ্বেষী হামলার বলি হন। ইসলামফোবিয়াবিরোধী ব্রিটিশ সংগঠন মেন্ডের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ‘আধুনিকতা’, ‘ব্যক্তি স্বাধীনতা’ আর ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা’র পাশ্চাত্য ডিসকোর্সে যে দেশের পরিচয় নির্মিত; সেই যুক্তরাজ্যে বছরে প্রায় ৭ হাজারটি মুসলিমবিদ্বেষী অপরাধ সংঘটিত হয়।