৬ রাত পর মুক্ত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি
বেতন ভাতা না দেয়ায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক টানা পাঁচ দিন ছয় রাত অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত হলেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এ কে এম নুর-উন-নবী। শনিবার মধ্য রাত পর্যন্ত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় আন্দোলনকারীদের বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধের শর্তে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করেছেন তারা। অন্যদিকে ইউজিসির অনুমোদন না থাকা সাবেক ভিসির আমলে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ৩৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাবী আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গনসংযোগ বিভাগের তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জানান, গত মঙ্গলবার সকাল ১১ টা থেকে বকেয়া বেতনভাতার দাবীতে ভিসিকে অবরুদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। উদ্ভুত পরস্থিতিতে শনিবার রাতে ভিসি প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবীর সভাপতিত্বে জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ইউজিসি অনুমোদিত পদে নিয়োগকৃত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জুলাই-আগস্ট মাসের বেতন, গত ঈদ-উল-ফিতরের বোনাস প্রদান, অনুমোদিত পদে পদায়ন ও শিক্ষাছুটি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর শনিবার রাত একটায় আন্দোলনরত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের শিকগণ অবরোধ ও অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। পরে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও লাগাতার কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এর আগে গত শুক্রবার দাবি বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষকদের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকগণ আমরণ অনশন স্থগিত করেন। এর মাধ্যমে রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ও কাস-পরীক্ষা শুরু হয়েছে বলে দাবী করেছেন এই তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ড. আবুল কালাম মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, আমাদের ন্যায্য পাওনা বেতনভাতা দেয়ার শর্তে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেছি। এরমধ্যেই দাবী মানা না হলে আবারো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের সদস্য সচিব ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, সাবেক ভিসি আব্দুল জলিল মিয়ার কারণেই শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাই তার বিচার হওয়া উচিত। আজ সোমবারের মধ্যে বেতনভাতা দেয়া না হলে আবারও আমরা আমরণ অনশনে যাবো। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, আপাতত ইউজিসি অনুমোদিত ৯২ জন শিক্ষকসহ ৩৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীরবেতন ভাতা দেয়ার শর্তে তাদের আন্দোলন স্থগিত হলেও ইউজিসির অনুমোদনবিহীন নিয়োগ পাওয়া ৩৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। তবে এদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন আছে কিনা এ জন্য ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট গত ১৯ সেপ্টেম্বর জমা পড়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এ বিষয়ে একটি চুড়ান্ত ফলাফল ইউজিসি থেকে আসতে পারে। ওই রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে এই ৩৩৮ জনের চাকরি স্থায়ীকরণসহ বেতনভাতার বিষয়টি।