প্রতি আড়াই মিনিটে ১জন ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাচ্ছেন
প্রতি আড়াই মিনিটে ১জন অভিবাসী ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাচ্ছেন। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেলেই আবাসিক সহ অন্যান্য সুবিধা মেলে। ব্রিটিশ মাইগ্রেশন ওয়াচের চেয়ারম্যান স্যার এ্যান্ডু্র গ্রিন এত বিপুল হারে অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্যে লেবার পার্টির নীতিকে দায়ী করেছেন । ২০০০ সাল থেকে কুড়ি লাখ অভিবাসী ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তবে ভারত এ তালিকায় সবার আগে থাকলেও ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে অষ্টমে।
গত বছর ব্রিটিশ নাগরিকত্বের জন্যে বিভিন্ন দেশ থেকে ২ লাখ ৪ হাজার ৫৪১ জন আবেদন করে। ব্রিটিশ রাজনীতিকদের অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব দেশের অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেবার ব্যাপারে পাসপোর্টকে রাবার স্ট্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে গত ১৩ বছরে সামাজিকভাবে ব্যাপক পরিবর্তনও লক্ষ্য করা গেছে।
সম্প্রতি যারা ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছেন তারা আবেদন করেছিলেন ২০০৮ সাল বা তারও আগে। সাধারণত ৫ বছর ব্রিটেনে বসবাস করার পর কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়লে নাগকিত্ব পাওয়ার পথ সুগম হয়। সবচেয়ে বেশি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, চীন ও ফিলিপাইনের নাগরিকরা।
স্যার এ্যান্ড্রুর মতে ১৯৯৭ সাল থেকে অন্তত চল্লিশ লাখ অভিবাসী ব্রিটেনে আসার পর তাদের অর্ধেকই নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তারা কিভাবে ব্রিটিশ সমাজের অংশ হয়ে যাচ্ছে সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা মিলছেনা। ভোটার হবার সুযোগ থাকায় রাজনৈতিক কারণে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেয়ার ব্যাপারে উদার মনোভাব লক্ষ্য করা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে লেবার পার্টির সমর্থক এ্যান্ড্রু নেদার মনে করেন, বৈচিত্রের মধ্যে মানব সম্পদের উৎস সৃষ্টি করার জন্যে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেয়া হয়ে থাকে।
এদিকে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেয়ার কারণে চাকরি সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্রিটিশদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হচ্ছে। যেমন গত বছর ব্রিটিশ নাগরিকদের মধ্যে ২ লাখ ৮ হাজার চাকরির বাজারে প্রবেশ করলে এর পাশাপাশি ৯৮ হাজার নতুন ব্রিটিশ নাগরিক চাকরি খোঁজেন যারা অভিবাসী হিসেবে দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছেন।
অনেক ক্ষেত্রে অভিবাসীরা মূল ব্রিটিশদের চেয়ে সহজে কাজ পেয়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ২ লাখ ৪ হাজার জন রয়েছেন যারা ব্রিটেনের বাইরে জম্মগ্রহণ করেছেন। প্রতি বছরে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে আবেদনকারীর সংখ্যা বাড়ছে ৯ ভাগ হারে। তবে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অধিকার নয়, সুযোগ।
গত বছর ভারতের ২৮ হাজার ৩৫২ নাগরিক ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছেন। এরপর রয়েছে, পাকিস্তান ১৮ হাজার ৪৪৫, নাইজেরিয়া ৮ হাজার ৮৮১, ফিলিপাইন ৮ হাজার ১২২, চীন ৭ হাজার ১৯৮, দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ হাজার ১৬৩, শ্রীলঙ্কা ৬ হাজার ১৬৩, বাংলাদেশ ৫ হাজার ৭০২, জিম্বাবুয়ে ৫ হাজার ৬৪৭ ও সোমালিয়া ৫ হাজার ১৪৩ জন।