নির্বাচনী মাঠ তদারকিতে দেড় হাজার ম্যাজিস্ট্রেট
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংঘটিত অপরাধের বিচার, লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোটের মাঠে থাকছেন দেড় হাজার জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ইতিমধ্যেই আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা তা দেখতে ৬ শতাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছে। ভোটের আগের দিন থেকে ভোটের পরের দুই দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবেন ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
এছাড়া নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে ২৪৪ জন জুডিশিয়াল কর্মকর্তাকে নিয়ে ১২২টি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ইসির পৃথক আদেশে এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফলের গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী, তার সমর্থক বা অন্য কেউ আইন ও বিধি লঙ্ঘন করলে বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তাদেরকে সংক্ষিপ্ত বিচারের মাধ্যমে সাজা দেবেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। তারা লেভেল প্লেইং ফিল্ড গঠনেও কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।
তিনি বলেন, আচরণ বিধিমালা নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ শুরু করেছেন। প্রশিক্ষণের সময় তাদের বলা হয়েছে, কারও প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ নয়, সব দলের সব প্রার্থীকে সমান চোখে দেখতে হবে।
জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬৪০ জন, ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটিতে ২৪৪ জন ও ছয় শতাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সব মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন নির্বাচনে। এর মধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) এর ধারা ৮৯-এ উল্লিখিত ধারা ৭৩, ৭৪, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১ ও ৮২-এ অধীন নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচারের জন্য মাঠে থাকবেন ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
৩০০ আসনের প্রতিটিতে ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আগামী ২৯ ডিসেম্বর মাঠে নামবেন। একাধিক উপজেলা বা উপজেলার অংশ নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকার ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলা বা উপজেলার অংশবিশেষের জন্য ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হবে। নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ, প্রার্থীদের আচরণবিধি ভঙ্গ তদারকি এবং ক্ষমতার অপ্রব্যবহার নিয়ন্ত্রণে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এসব কমিটি নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম আমলে নিয়ে সামারি ট্রায়ালের মাধ্যমে শান্তি ও জরিমানা করবে। প্রথম পর্যায়ে ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য ১২২টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার এসব কমিটি গঠনের চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি উপজেলায় ১ জন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত প্রতি ৩-৪টি ওয়ার্ডেও জন্য ১ জন করে, সিটির বাইরে জেলা সদরে প্রতি পৌর এলাকায় ১-২ জন এবং পার্বত্য এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত ৩-৪ উপজেলার জন্য ১ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ৩০০ সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। একই সঙ্গে ওই দিন থেকে প্রার্থীদের প্রচারণা শুরু হয়ে যাবে। আর তখনই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, তির্যক বাক্য-বিনিময় এবং একে অন্যকে ঘায়েল করার প্রবণতা বাড়বে। এই শঙ্কা থেকেই ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণে দেয়া হচ্ছে নানা নির্দেশনা।