মাশরাফির রাজনীতি নিয়ে পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেইসবুক স্ট্যাটাস আলোচনায়
বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তোজার রাজনীতিতে আগমনকে অনেকেই যেমন স্বাগত জানিয়েছেন, অনেকেই আবার নেতিবাচক মন্তব্যও করেছেন। ক্রিকেটের মাঠ ছেড়ে রাজনীতিতে ক্যারিয়ার শুরু করায় দেশের মানুষের কাছে মাশরাফির যে অকুণ্ঠ ভালোবাসা ছিল সেটিতে ভাটা পড়বে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
এ নিয়ে সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন লেখক ও ফেসবুক অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। পাঠকের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
মাশরাফি বিন মুর্তাজা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নিজেকে একজন সংবেদনহীন অরাজনৈতিক মানুষ হিসেবে প্রতিপন্ন করেছে।
মাশরাফির কাছে দেশে চলমান অব্যাহত লুটপাট গ্রহণযোগ্য, সুতীব্র মানবাধিকার লঙ্ঘন গ্রহণযোগ্য, স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন গ্রহণযোগ্য, বাক, ব্যক্তি ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ গ্রহণযোগ্য। মৌলিক ও মানবিক অধিকার পুরোপুরি ভূলুণ্ঠিত হওয়াতেও কোন সমস্যা নেই।
শাসক গোষ্ঠি কোন আইন মানছে না৷ তাদের গুণ্ডামী, জবরদস্তি ও মাত্রাহীন বলপ্রয়োগ করাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি হিসাবে গ্রহণ করেছে, সেটাতেও তার সমস্যা নেই।
প্রত্যেকটা গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ভোটাধিকার নাই পুরো দেশবাসীর। তারা শুধু যে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন’-এ ভোট দেয়ার অধিকার হারিয়েছে তাই নয়, একই সাথে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন সহ কোন নির্বাচনেই তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারছে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকরাও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মাশরাফি বিন মুর্তাজা এসব মনে হয় দেখতে পায়নি।
এই দুর্বহ শাসনের অবসান চাইলে সে দেশের মানুষের কাছে একজন সত্যিকারের হিরোর মর্যাদা পেত।
তবে সে তো হিরো হতে চায়না, একজন সেলিব্রেটেড ক্রিকেটারও হতে চায়না। এমনকি ইমরান খানের মতো দল গড়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের পর দেশের ভাগ্য গড়ার দায়িত্ব ও নিতে চায়না; সে শর্টকাটে রাজনীতি নামের ক্ষমতা কাঠামোর নাটবল্টু হতে চায়। সে একজন আওয়ামী লীগের নেতা হতে চায়, যেই দল দীর্ঘ বর্ণময় ঐতিহ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে জনমানুষের আকাঙ্খার বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে।
জনগনের অকুন্ঠ ভালবাসার চাইতে একটা ফ্যাসিস্ট শাসনের নাটবল্টু হওয়া যার কাছে অধিক আনন্দের তাকে আজ চিনে নিতে পারাটাও কম গুরুত্বপুর্ন নয়।
বিদায় প্রিয় ম্যাশ। বাংলাদেশের মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসার সাথে অনেকেই প্রতারণা করেছে অতীতে। আপনিই বা তার ব্যতিক্রম হবেন কেন আজ?