সিলেটে এক বছরে ৬৬ নতুন এইডস রোগী
সিলেটে গত এক বছরে এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ বছর ৬৬ জনের নতুন করে এইচআইভি ভাইরাস ধরা পড়েছে। এর মধ্যে নারী, পুরুষ, শিশু ও তৃতীয় লিঙ্গও রয়েছেন।খবর ইউএনবির।
এ ধরনের রোগীর বাড়ার পেছনের কারণ হিসেবে বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের অজ্ঞতাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপশি ধর্মীয় অনুশাসন বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
সিলেট বিভাগে এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘আশার আলো’ ও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমআরটি সেন্টারের তথ্যমতে, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে এইডস রোগীর সংখ্যা ৯০২ জন। এক বছর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সংখ্যাটি ছিল ৮৩৬ জন।
১৯৯৮ সালে সিলেটে প্রথম এইডস রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলের চার জেলায় ৩৬৬ জন এইডস রোগে মারা গেছেন বলে এ সংস্থার তথ্যে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, ২০০৩ সালে সিলেটে এইচআইভি সংক্রমণ ও এইডস রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা ছিল ২৮ জন। আর চলতি বছরে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০২-এ। ইতিমধ্যে মারা গেছেন ৩৬৬, জীবিত আছেন ৫৩৬ জন। জীবিতদের মধ্যে পুরুষ ২৬৭, নারী ২২৪, শিশু ৪৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ২ জন রয়েছেন।
আশার আলো সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. আব্দুর রহমান জানান, প্রবাসে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের এইচআইভি ভাইরাস ও এইডস সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নেই। যে কারণে তারা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। আর দেশে এসে চক্ষুলজ্জার কারণে তারা বিষয়টি গোপন রাখেন। ফলে তা তাদের স্ত্রীদের মধ্যেও ছড়াচ্ছে। এ জন্য বিমানবন্দর এবং স্থলবন্দরগুলোতে এইচআইভি পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শও দেন তিনি।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এইচআইভি সেবা জোরদারকরণ কার্যক্রমের ব্যবস্থাপক মো. মোতাহের হোসেন জানান, ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ওসমানী হাসপাতালে এমআরটি সেন্টার চালু রয়েছে। এ সেন্টার থেকে এ পর্যন্ত এইচআইভির ওষুধ ও অন্যান্য স্বাস্থসেবা নিচ্ছেন ৪৭৮ জন। এখানে এইচআইভি আক্রান্তদের ওষুধসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে দেয়া হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, ২০১৩ সালে ওসমানী হাসপাতালে প্রথমবারের মতো গর্ভবতী নারীদের বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষাসহ অন্যান্য সেবা প্রদান শুরু হয়। এরপর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৪২ জন মা পূর্ণ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন মা সন্তান প্রসবের অপেক্ষায় রয়েছেন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার এ কে মাহবুবুল হক বলেন, সঠিক সময়ে এইচআইভি শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা সম্ভব। পরিচয় গোপন রেখে এই হাসপাতালে আক্রান্তদের বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়। কাজেই নির্দ্বিধায় যে কেউ সেবা নিতে আসতে পারেন।