পিছু হটলো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
ব্যাপক সমালোচনার মুখে পিছু হটেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। ইংরেজি বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের ছাত্রী হাফসা ইসলামের আইডি কার্ড সক্রিয় করে দেয়াসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিয়ম শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হাফসার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাফসার পরিবার বলেছে, যে ড্রেস কোড নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেটাই পরিবর্তন করতে হবে। হাফসাকে পরবর্তী সেমিস্টারে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আইনুন নিশাত বলেন, আমরা হাফসাকে একটি চিঠি দিয়েছি। সে আগে যে ড্রেস পরে আসতো এখন তা পরেই আসতে পারবে। তার জন্য মহিলা নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে। চিঠিতে হাফসার বহিষ্কারাদেশও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। কিন্তু হাফসার বড় ভাই আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ঈসা বলেন, আমরা এ ধরনের কোন চিঠি পাইনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মৌখিক প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ঈসা বলেন, কর্তৃপক্ষ বলছে হিজাব বা নিকাবের বিষয়ে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু ঠিকই তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে শুধু হাফসার হিজাব পরার বিষয়টি যদি শিথিল করা হয় তাহলে সে সিদ্ধান্ত মানা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেস কোড পরিবর্তন করতে হবে। অন্যথায় বিষয়টি আইনগতভাবেই মোকাবিলা করা হবে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ঈসা বলেন, হাফসাকে যে চিঠি দেয়া হয়েছে সেখানে বোর্ড অব ট্রাস্টির সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। আমাদের কথা হচ্ছে, ওই ড্রেস কোডই পরিবর্তন করতে হবে। আর যেহেতু লিখিতভাবে হাফসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তাই লিখিতভাবেই তা প্রত্যাহার করতে হবে। আর সেটা বোর্ড অব ট্রাস্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হতে হবে। এ বিষয়ে ছাত্রী হাফসা ইসলাম বলেন, বোরকার সঙ্গে নেকাব পরায় গত দুই সেমিস্টার ধরে আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এভাবে আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে বোরকা ও নেকাব ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। জানুয়ারিতে নোটিশ জারির পরই এ ধরনের কড়াকড়ি শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ড্রেস কোডের দোহাই দিলেও গত ২২শে জানুয়ারি একটি নোটিশ জারি করে। এতে ড্রেস কোড ও নিরাপত্তার অজুহাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের বোরকা, নেকাব ও হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়। এ নোটিশের পর যেসব ছাত্রী বোরকা, হিজাব কিংবা নেকাব পরতেন তাদের ২৮শে মে শোকজ করা হয়। হাফসাকেও একই দিনে শোকজ করা হয়েছিল। ৩রা জুনের মধ্যে তার কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়। হাফসা জবাব দিলেও তা কর্তৃপক্ষের পছন্দ হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাকে গত ১২ই সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। -মানবজমিন